মা হলেন ‘পাগলি’, বাবা হলো না কেউ!
শরীয়তপুরে চায়না আক্তার (২৫) নামের মানসিক ভারসাম্যহীন এক তরুণী প্রসব করেছেন এক কন্যা সন্তান। নিজেই তাঁর বাচ্চার নাম দিয়েছেন ছিনথিয়া।
রাতভর সেবিকাদের পাশাপাশি তাঁর বাচ্চার দেখাশুনা করেন সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী রুপা আক্তার। উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদপ্তর দায়িত্ব নিয়েছে বাচ্চা ও তার মায়ের। বাচ্চা ও মা সুস্থ আছে। তাঁকে নিয়ে চিন্তিত চিকিৎসক ও নার্স।
জেলার নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর বাজারে দীর্ঘদিন ধরে থাকতেন চায়না আক্তার নামের ওই মানসিক ভারসাম্যহীন নারী। গতকাল রাতে তাঁর প্রসববেদনা উঠলে নড়িয়া উপজেলার প্রশাসনের মাধ্যমে অ্যাম্বুলেন্সে করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে আনা হয়। এরপর রাত ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি বাচ্চা প্রসব করেন। সেখানে জন্ম নেয় ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তান। জন্মের পর থেকেই তাঁর বাচ্চাকে রেখে তিনি বের হয়ে যেতে চাচ্ছিলেন। তাঁকে কয়েকবার হাসপাতালের নার্সরা জোর করে বেডে নিয়ে আসেন। তাঁকে নিয়ে চিন্তিত চিকিৎসক ও নার্সরা।
এদিকে চায়না আক্তার মা হলেও তার সন্তানের বাবার সন্ধান পাওয়া যায়নি। স্থানীয়দের ধারণা, কোনো ব্যক্তির ধর্ষণের ফলে চায়না মা হয়েছেন। যে বা যারা এ রকম অমানবিক কাজ করেছে তাদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা।
স্কুলছাত্রী রুপা আক্তার বলে, ‘তাঁর পাশের বেডে আমার বোনকে ভর্তি করেছি। ওই নারীর সন্তান জন্ম হওয়ার পর কেউ তাঁর পাশে আসেনি। আমি তাঁর সন্তানকে পরিষ্কার করেছি। রাতে আমার পাশে মেয়েকে রেখেছি...।’
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মনির আহমেদ খান বলেন, ‘গতকাল রাতে নড়িয়া থেকে আমাদের হাসপাতালে একজন নারীকে নিয়ে আসে। তাঁর একটি কন্যা সন্তান জন্ম হয়। এখন সুস্থ আছে তাঁরা। আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছি, আমরা তাঁর দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছি। আমরা সমাজসেবার মাধ্যমে তাঁর বাচ্চার সুরক্ষা এবং তাঁকে চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা করতেছি।’
সদরের ইউএনও মাহবুর রহমান বলেন, ‘এ নারী মানসিক ভারসাম্যহীন। গতকাল মধ্যরাতে তিনি ব্যথায় কাতরানোর পরে বিষয়টি আমার নলেজে আসে। পরে আমি তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করি এবং তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন।’
সদর উপজেলা সমাজসেবা প্রবেশন অফিসার তাপস বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে বাচ্চা ও তার মায়ের সব ধরনের দায়িত্ব নিয়েছি।’