মিথ্যা ধর্ষণ মামলা করায় স্বামী-স্ত্রীর ৫ বছর কারাদণ্ড
নওগাঁয় স্ত্রীকে দিয়ে মিথ্যা ধর্ষণের মামলা করানোয় স্বামী-স্ত্রীর পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
আজ মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২-এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার এ আদেশ দেন।
মামলায় রাষ্ট্র পক্ষের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. মকবুল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত স্বামী-স্ত্রী হলেন জেলার সাপাহার উপজেলার নূরপুর গ্রামের আফসার আলী ও তাঁর স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বেগুনগাছ কাটাকে কেন্দ্র করে জেলার সাপাহার গ্রামের ওসমান গনির সঙ্গে আফসার আলীর বিরোধ হয়। এর সূত্র ধরে মনোয়ারা খাতুনকে বিয়ের প্রলোভন দেন আফসার আলী। এরপর মনোয়ারা খাতুনকে দিয়ে ২০০৫ সালের ৬ এপ্রিল ওসমান গনির বিরুদ্ধে সাপাহার থানায় একটি অভিযোগ করানো হয়। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় সাপাহার বাজার থেকে উকিলপাড়া যাওয়ার পথে তিলনা রোডের আফিল উদ্দিনের বাড়ির কাছে পৌঁছালে ওসমান গনি পিছন দিক থেকে মনোয়ারা খাতুনকে জাপটে ধরেন। পরে রাস্তার পাশে ধানের চাতালে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এরপর পুলিশ তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা আছে মর্মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। উভয় পক্ষের সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে ২০১৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আদালত বেগুনগাছ কাটাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে ধর্ষণের এই মিথ্যা মামলা করা হয় মর্মে প্রতীয়মান হয়। পরে ওসমান গনিকে আদালত বেকসুর খালাস দেন।
এরপর ওসমান গনি ২০১৩ সালে ১১ সেপ্টেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণের মামলা করায় আফসার আলী ও মনোয়ারাকে অভিযুক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। দুই পক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ আদালত আফসার আলী ও মনোয়ারা খাতুনকে পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। এ ছাড়া ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ঢ অনাদায়ে আরও তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।
এর আগে আফসার আলী আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর স্ত্রী মনোয়ারা খাতুনের বিরুদ্ধে সাজার আদেশসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।