মৃত্যুদণ্ডে খুশি আসামিও!
মৃত্যুদণ্ডের আদেশে আসামি খুশির ঘটনা বিরল। এমন রায়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে কাঠগড়ায় সিজদায় পড়ে শুকরিয়া আদায়ের দৃশ্য আগে কেউ দেখেছেন কি না, বলা কঠিন। তবে, আজ মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) এমন ঘটনার স্বাক্ষী হলেন ঢাকা মহানগর ৭ম অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে উপস্থিত সবাই।
রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় দুই শিশু সন্তানসহ স্ত্রীকে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেডের (বিটিসিএল) সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী রাকিব উদ্দিন আহম্মেদ লিটন হত্যা করেন। আদালতে আজ সেই মামলার রায় দেওয়া হয়। রায়ে রাকিবকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
ঢাকা মহানগর ৭ম অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক তেহসিন ইফতেখার আজ মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে রায় ঘোষণা শেষ করেন। রায় ঘোষণা পর সন্তোষ প্রকাশ করে কাঠগড়ায় সিজদার মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করেন আসামি রাকিব উদ্দিন।
পরে আদালত থেকে বের হয়ে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি রায়ে সন্তোষ প্রকার করছি। আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমার স্ত্রী-সন্তান যেখানে, আমি সেখানে চলে যেতে চাই। আমার কোনো অভিযোগ নেই।’
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রাকিব আরও বলেন, ‘আমি রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব না। আমি চাই—দ্রুত রায় কার্যকর হোক।’
এই রায়ে খুশি মামলার বাদী নিহত মুন্নির ভাই মুন্না রহমান এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। মুন্না রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমার দুইবোনকে একই পরিবারে বিয়ে দিয়েছিলাম। ছোট বোন রাকিবকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল। সংসারে সুখের অভাব ছিল না। কিন্তু রাকিব এক সময় মাদক ও জুয়া খেলায় জড়িত হয়। যার পরিণতিতে পুরো পরিবার তছনছ হয়ে গেছে। দুটি ফুটফুটে সন্তানকে কীভাবে সে হত্যা করেছিল। আমি চাই আর কোনো পরিবার এভাবে যেন ধ্বংস না হয়।’
অতিরিক্ত পিপি মাহবুবুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এটি একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা। জুয়ার ছোবলে একটি পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। রাষ্ট্রপক্ষ আসামির অপরাধ প্রমাণ করতে পারায় আদালত সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়েছেন। রায়ে আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি।’
উল্লেখ্য, এর আগে গত নভেম্বরে এ চাঞ্চল্যকর মামলায় শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য ২২ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। ওদিন বিশ্ব ইজতেমার কারণে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে আসামি হাজির করা সম্ভব হয়নি। তাই পুনরায় ৩১ জানুয়ারি রায়ের জন্য দিন ধার্য হয়।