মেরি স্টোপস থেকে নবজাতক ‘উধাও’, কর্তৃপক্ষকে দুষছেন স্বজনরা
নরসিংদীতে মেরি স্টোপস মেটারনিটি ক্লিনিক থেকে একটি নবজাতক ‘উধাও’ হয়ে গেছে বলে অভিযোগ পেয়েছে পুলিশ। স্বজনরা অভিযোগ করছেন, পাওনা টাকা দিতে না পারায় কর্তৃপক্ষ নবজাতককে সরিয়ে ফেলেছে। অন্যদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, নবজাতককে তারই এক আত্মীয় নিয়ে বেরিয়ে গেছেন।
এ ব্যাপারে সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইমরান হাসান গতকাল বুধবার গভীর রাতে বলেন, ‘খবর পেয়ে ক্লিনিকে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নবজাতকের মা, ক্লিনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও নার্সদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
পুলিশ জানায়, গতকাল বুধবার রাতে শহরের বাসাইল এলাকায় মেরি স্টোপস মেটারনিটি ক্লিনিক থেকে নবজাতক ‘উধাও’ হওয়ার খবর পান তাঁরা। পরে রাত ১২টার দিকে ক্লিনিক পরিদর্শন করে পুলিশ।
পুলিশ ও নবজাতকের স্বজনরা জানিয়েছেন, গত রোববার বিকেলে প্রসবব্যথা নিয়ে শিবপুর উপজেলার কুমরাদী গ্রামের রাজমিস্ত্রি শাহ আলম মিয়ার স্ত্রী সখিনা বেগম মেরি স্টোপসে ভর্তি হন। রাতে সিজারিয়ানের মাধ্যমে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন সখিনা। অস্ত্রোপচার ও ওষুধসহ ১০ হাজার টাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি করেন সখিনার স্বজনরা।
কিন্তু স্বজনরা ঠিক সময়ে বিল পরিশোধ করতে পারেননি। এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগী ও রোগীর স্বজনদের তাগাদা দিচ্ছিল। একই সঙ্গে বিছানা খালি করারও নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর মধ্যে গতকাল সন্ধ্যায় সখিনা বেগমের মা সাথিয়া বেগম খাবার খেয়ে হাত ধোয়ার জন্য বাথরুমে যান। এ সময় বোরকা পরিহিত এক নারী নবজাতককে কোলে নিয়ে বের হয়ে যান।
সাথিয়া বেগম বলেন, তিনি সঙ্গে সঙ্গে ওই নারীর পেছনে ছুটে যান। ওই সময় হাসপাতালের গেট তালাবদ্ধ করে দেওয়া হয়।
রাতে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুজ্জামান, এসআই মো. ইমরান হাসানসহ পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
মেরি স্টোপস ক্লিনিকের মেডিকেল অফিসার ইসতিয়াক জাহান বলেন, ‘বাচ্চাটা নাই হয়েছে, এটা বলব না। কারণ, যার কাছে বাচ্চাটা ছিল, তাঁকে চাচাতো বোন হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন নবজাতকের মা। এখন চাচাতো বোন তাঁর বোনের বাচ্চা তো নিতেই পারেন।’
মেডিকেল অফিসার আরো বলেন, “তাঁর চাচাতো বোন এখন বাচ্চা কোথায় নিয়ে গেছেন, তা আমরা বলতে পারছি না। এর মধ্যে নবজাতকের মা বলেন, ‘আমার বাচ্চা নিয়ে ওই মহিলা কই গেছে?’ পরে বললাম, ‘কেন উনি না আপনার চাচাতো বোন?’ পরে উনি বলেন, ‘না উনাকে চিনি না।’”