লাল নিশান টানিয়ে ২ জলমহাল দখলে নিল প্রশাসন
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে দখলমুক্ত করে লাল নিশান টানিয়ে ‘মরাধনু’ ও ‘গজারিয়া’ জলমহাল দখলে নিয়েছে প্রশাসন। আজ রোববার (১৪ মে) দুপুরে উপজেলার গাগলাজুর ইউনিয়নের বরান্তর ও করাচাপুরের সামনে থাকা দুটি জলমহালে লাল নিশান টানিয়ে দখলে নেয় প্রশাসন।
এর আগে ওই দুটি জলমহাল ব্যক্তি দখলে ছিল।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার মোহনগঞ্জের ‘মরাধনু’ জলমহালটির আয়তন ২২২.৮৭ একর। রফিক আহমেদ কুতুব নামে এক ব্যক্তি এই জলমহালটি এক বছরের জন্য লিজ নেন। গত ১৩ এপ্রিল সময় শেষ হওয়ায় তিনি এটি ছেড়ে দেন। পরে স্থানীয় গোলাম রসুল খান মিষ্টু নামে এক ব্যক্তি আদালতের রায়ে এটি লিজ পেয়েছেন দাবি করে নিজের দখলে রাখেন। এদিকে ৫০ একরের বেশি ‘গজারিয়া’ জলমহালটিও তিন বছরের জন্য লিজ পেয়েছিলেন সোহাগ মিয়া। গত ১৩ এপ্রিল এটির সময় শেষ হয়। কিন্তু সময় শেষ হওয়ার পরও নিজের দখলে রেখে মাছ আহরণ করছিলেন তিনি। এমন অভিযোগে আজ জলমহালে লাল নিশান টানিয়ে দখলে নেয় স্থানীয় প্রশাসন।
কোনো জলমহালের পরিমাণ ২০ একরের বেশি হলে এটির দরপত্র আহ্বান করা হয় জেলা প্রশাসন থেকে। সেই হিসেবে ওই দুটি জলমহালের জেলা প্রশাসন থেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়। কোনো মৎস্যজীবী সমিতি লিজ পেয়েছে কি না, এটা এখনও প্রকাশ হয়নি।
মরাধনু জলমহালটি দখলে রাখা বরান্তর গ্রামের গোলাম রসুল খান মিষ্টু জানান, তিনি জলমহালাটির ইজারা পেয়ে গত তিন বছর ধরে মাছ আহরণ করছেন। টেন্ডারে এটি তাঁর সমিতি লিজ পেয়েছে। হাইকোর্টের আদেশে তাঁকে বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে। বারবার এ কথা জানানোর পরও প্রশাসন তাঁকে জলমহালটি বুঝিয়ে দিচ্ছে না। কাগজেপত্রে জলমহালটি বুঝিয়ে দেওয়ার আগে তিনি দেখাশোনা করছেন। লোকজন দিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করেন এবং মাছ আহরণ করছেন।
গাগলাজুর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) শামীম আকন্দ বলেন, ‘জলমহাল দুটি দখল করে রেখেছে এমন খবর পেয়ে গিয়ে লাল নিশান টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেন মানুষ জানে ওই জলমহাল দুটি প্রশাসনের অধীনে রয়েছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্যারের নির্দেশে গিয়ে লাল নিশান টানানো হয়েছে। অন্যসব বিষয় স্যার বলতে পারবেন।’
মোহনগঞ্জের সহাকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, জেলা প্রশাসন থেকে নির্দেশ আছে জলমহালটি প্রশাসনের দখলে রাখার। তাই লাল নিশান টানিয়ে দখলে নিয়ে লোকজনকে জানানো হয়েছে। মরাধনু নিয়ে যদি আদালতের আদেশ থেকে থাকে তাহলে জেলা প্রশাসন থেকে নির্দেশনা পেয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা জেলা প্রশাসন থেকে দেওয়া হলে সেই অনুযায়ী বুঝিয়ে দেওয়া হবে। তবে এখনও এমন কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি বলেও তিনি জানান। সর্বশেষ নির্দেশনায় জলমহালটি সরকারি দখলে রাখতে বলা হয়েছে। এখান থেকে কেউ মাছ ধরতে পারবে না।
মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি বলেন, ‘এলাকার কতিপয় ব্যক্তি ওই জলমহালে মাছ আহরণ করছিল। জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় জলমহাল দখলে নিয়ে লাল নিশান টানানো হয়েছে।’