সাংবাদিক মাহবুবের বাবা হাজি এস্কেন্দার আলীর ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
এনটিভির গোপালগঞ্জের স্টাফ রিপোর্টার মাহবুব হোসেন সারমাতের বাবা, সাবেক সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) অ্যাডভোকেট হাজি মো. এস্কেন্দার আলী সরদারের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।
মরহুমের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ থানাপাড়ার নিজ বাসভবনে কোরআনখানি, দোয়া মাহফিল ও রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া মোনাজাত করা হয়।
অ্যাডভোকেট হাজি মো. এস্কেন্দার আলী সরদার ১৯৩৭ সালে গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার করপাড়া ইউনিয়নের বলাকইড় গ্রামের সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মোকাম্মেল হোসেন সরদার ও মায়ের নাম মাজু বিবি। ছোটবেলায় তাঁর বাবা ইন্তেকাল করায় মা মাজু বিবি সংসারের হাল ধরেন। তখন তাঁর পরিবারে কোনো পুরুষ অভিভাবক না থাকায় নানা সংগ্রাম করে সন্তানের শিক্ষাগ্রহণে ভূমিকা পালন করেন মা মাজু বিবি। তারই প্রেরণায় হাজি মো. এস্কেন্দার আলী সরদার গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ শেষে হাইস্কুলের শুরুতে বৌলতলী সাহাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।
পরে কাঠি খানারপাড় তেলিগাতি হাজি নেয়াল উদ্দিন (কেকেটি এইচ এন সি) উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। এরপর খুলনা বিএল (ব্রজলাল) কলেজ থেকে এইচএসসি ও বিএ পাস করেন।
তিনি ছিলেন নানামুখী প্রতিভার অধিকারী। ছাত্রজীবনে তিনি সহপাঠীদের সংগঠিত করে গ্রামে থিয়েটার, নাটক ও সৌখিন যাত্রাপালা করতেন। তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক কর্মী। খুলনার একটি নিউজপ্রিন্ট মিলে কর্মকর্তা হিসেবে কিছুদিন চাকরি করেন। এরপর শিক্ষকতা করেছেন দীর্ঘদিন। নিজ গ্রামে বলাকইড় আজহারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক ছিলেন তিনি।
এরপর গোপালগঞ্জ শহরের ওহাব আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে দুই বছর প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। এসময় তিনি আইন পেশায় নিয়োজিত হওয়ার মন স্থির করেন। তিনি কঠোর অধ্যবসায়ের মধ্যদিয়ে আইন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে আশির দশকে আইন পেশায় নিজেকে যুক্ত করেন। এরপর গোপালগঞ্জের আদালতে সরকারি কৌঁসুলির (জিপি) দায়িত্ব পালন করেন। জীবন সায়াহ্নে তিনি কোরআন শরীফ পাঠ ও আয়ত্ব করার প্রবল ইচ্ছা পোষণ করেন। এজন্য বাড়িতে হুজুর রেখে কোরআন শিক্ষা গ্রহণ করেন। কোরআন শরীফ নিজে আয়ত্ব করে পাঠ করেন। এরপর পবিত্র হজব্রত পালন করেন। হজ পালন করার পর তিনি স্বজ্ঞানে খাস কলেমায় ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তিনি ছয় ছেলে ও চার মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর সন্তানেরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন।