ভাষাসৈনিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, ১১ নম্বর সেক্টরের কোম্পানি কমান্ডার, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মো. ফজলুর রহমান চৌধুরী বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে হবিগঞ্জ শহরের ইনাতাবাদস্থ বাসভবনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

ফজলুর রহমান চৌধুরীর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। তিনি স্ত্রী, আট ছেলে, এক মেয়ে, নাতি, নাতনিসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি, চ্যানেল আই ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি চৌধুরী মোহাম্মদ ফরিয়াদের বাবা।

ফজলুর রহমান চৌধুরীর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আত্মীয়স্বজন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড, সাংবাদিক, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ শেষবারের মতো তাঁকে দেখার জন্য বাসভবনে ভিড় করেন। তাঁর মৃত্যুতে জেলা জুড়ে নামে আসে শোকের ছায়া।

আজ বাদ জোহর শহরের টাউন মসজিদে (চাঁন মিয়া) মরহুমের প্রথম জানাজা হয়। দ্বিতীয় জানাজা গ্রামের বাড়ি আজমিরীগঞ্জ উপজেলার সৌলরী গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়। পরে সেখানে পারিবারিক কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মরহুমের দাফন সম্পন্ন করা হয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান চৌধুরী ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের কর্মসূচিগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। শুরুতে তিনি ভারতে ঢাল ক্যাম্পের ট্রেনিং ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ১১ নম্বর সেক্টরের কোম্পানি কমান্ডারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অভ্যন্তরীণ সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়ে তাঁর নেতৃত্বে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম, নিকলী ও ইটনা, নেত্রকোনার কলমাকান্দা, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, ময়মনসিংহের ভালুকা ও ফুলপুর থানা হানাদার মুক্ত করা হয়। যুদ্ধ শেষে তিনি ১৯৭২ সালে আজমিরীগঞ্জ থানা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রতিষ্ঠাতা কমান্ডার নির্বাচিত হন। ৩২ বছর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান চৌধুরী বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ভাগ্নে ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ফুপাতো ভাই। তিনি হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর চৌধুরী ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরীর আপন মামা।