৪২ ঘণ্টায় অভিযোগপত্র দাখিল : তদন্ত কর্মকর্তাকে সাসপেন্ডের নির্দেশ
মানিকগঞ্জে ভগ্নিপতিকে হত্যার ঘটনার ৪২ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের ঘটনায় তদন্তকারী কর্মকর্তা মানিকগঞ্জ সদর থানার উপপুলিশ পরিদর্শক মাসুদুর রহমানকে সাসপেন্ড করতে জেলা পুলিশ সুপারকে (এসপি) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি সাসপেন্ড থাকবেন বলে জানান রিটকারী আইনজীবী।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তাদরে দিয়ে তদন্ত করারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া পুলিশ সুপারের নিচে নয় এমন পর্যায়ের কর্মকর্তার দ্বারা ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত করতে বলেছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমানের ৪২ ঘণ্টার মধ্যে রুবেল হত্যার ঘটনা তদন্ত শেষ করার বিষয়ে করা রিটের শুনানি নিয়ে গতকাল সোমবার (৩ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
মানিকগঞ্জ সদর থানার সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কৈতরা এলাকায় একটি হ্যাচারির অভ্যন্তরে ইট চুরি করে বিক্রির ঘটনার জের ধরে বোন-জামাই রুবেলকে জবাই করে হত্যার ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ ঘটনায় মো. সোহেল ওরফে নুরুন নবীকে (২৬) গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার করা ব্যক্তি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার রাজনগর গ্রামের মৃত আলতু মিয়ার ছেলে।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রউফ সরকার জানান, আসামি সোহেল ১৬ সেপ্টেম্বর তার ভগ্নীপতি কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার তারাশ্বর গ্রামের রেনু মিয়ার ছেলে রুবেলের (২২) কর্মস্থলে বেড়াতে আসে। এরপর সোহেল ইট বিক্রি করে দেয়। এ নিয়ে রুবেলের সঙ্গে সোহেলের ঝগড়া হয়। পরে সোহেল ঘরে থাকা ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ভগ্নিপতি রুবেলকে হত্যা করে নিজেই থানায় আসে। এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী চম্পা আক্তার বাদী হয়ে স্বামী হত্যার দায়ে নিজের ভাই সোহেলকে আসামি করে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করেন মানিকগঞ্জ সদর থানার উপপুলিশ পরিদর্শক মাসুদুর রহমান। তিনি আসামির জবানবন্দি ও সাক্ষ্য নিয়ে ৪২ ঘণ্টার মধ্যে ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
গত ১৪ মার্চ রুবেল (২২) হত্যার ঘটনায় মরদেহ উদ্ধার থেকে নিয়ে মাত্র ৪২ ঘণ্টায় করা তদন্ত কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলজারি করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রুবেল হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মানিকগঞ্জ সদর থানার পুলিশের উপপরিদর্শক মো. মাসুদরে রহমানকে কেস ডকেটসহ ৩ এপ্রিল আদালতে হাজির হতে বলা হয়। এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর ফলে সোমবার আদালতে উপস্থিত হন পুলিশের ওই কর্মকর্তা।