মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গাইবান্ধার আবদুল জব্বার মণ্ডলসহ (৮৬) ছয় রাজাকারের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করতে আগামী ১২ মার্চ দিন নির্ধারণ করেছেন আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

আজ বুধবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।  বেঞ্চের অপর সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদী।

অপর আসামিরা হলেন- জাছিজার রহমান ওরফে খোকা (৬৪), আজগর হোসেন খান (৬৬),  মোন্তাজ আলী ব্যাপারী (৬৮),  আব্দুল ওয়াহেদ মণ্ডল (৬২) ও মো. রনজু মিয়া (৫৯)। তবে রনজু মিয়া ছাড়া সবাই পলাতক।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল ও সাবিনা ইয়াসমিন মুন্নী।

গত ২১ ডিসেম্বর এই ছয় আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে তদন্ত সংস্থা।  প্রতিবেদনে আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগসহ মোট চারটি অপরাধের অভিযোগ  রয়েছে। গত ২৯ মে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।

আসামিদের বিরুদ্ধে চার অভিযোগ

অভিযোগ-১ :  ১৯৭১ সালের জুন মাসের প্রথম দিকে রাজাকার আজগর হোসেন খানের নেতৃত্বে ৮-১০ জন রাজাকার এবং ১৫-২০ জন পাকিস্তান দখলকার সেনাবাহিনী হিন্দু সম্প্রদায়কে ধ্বংস করার জন্য গাইবান্ধা জেলার সদরের সাহাপাড়া ইউনিয়নের বিঞ্চপুর গ্রামে হামলা করে। তারা অম্বিকা চরণ সরকার, দ্বিজেন চন্দ্র সরকার ও আবদুল মজিদ প্রধানকে নির্যাতন করে। আসামিরা ফুল কুমারী রানী ও তাঁর জা সাধনা রানী সরকার (বর্তমানে মৃত) আটক করে নির্যাতন করে। তাঁরা মুসলমান হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে কপালের সিঁদুর এবং হাতের শাখা ভেঙে দিয়ে ছেড়ে দেয়।

অভিযোগ-২ : গাইবান্ধা জেলার সদর থানাধীন সাহাপাড়া ইউনিয়নের নান্দিনা গ্রামে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে আবু বক্কর, তারা আকন্দ, আনছার আলী এবং নছিম উদ্দিন আকন্দসহ মোট নয়জনকে গুলি করে হত্যা করে এবং ৪০-৫০টি বাড়ির মালামাল ‍লুণ্ঠন করে পুড়িয়ে দেয়।

অভিযোগ-৩ : গাইবান্ধা জেলার সদর থানার সাহাপাড়া ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে লাল মিয়া বেপারী, আব্দুল বাকী এবং খলিলার রহমানসহ পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করে।

অভিযোগ-৪ : গাইবান্ধার সাহাপাড়া ইউনিয়নের নান্দিনা,  সাহারবাজার, কাশদহ, বিসিক শিল্প নগরী, ভবানীপুর এবং চকগায়েশপুর গ্রামে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে নিরস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা ওমর ফারুক, ইসলাম উদ্দিন এবং নবীর হোসেনসহ মোট সাতজনকে গুলি করে হত্যা করে।