সোমেশ্বরী তীরে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ
নেত্রকোনার পাহাড়ি অঞ্চল দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদীর তীরে স্বেচ্চাশ্রমে নির্মিত হয়েছে বাঁধ। পাহাড়ি ঢল ও বন্যার ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচতে এক কিলোমিটার দীর্ঘ এই বাঁধ তৈরিতে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর পাশাপাশি হাত লাগিয়েছে বিদেশিরাও।
গত বছর অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যায় দুর্গাপুর পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। এ ছাড়া বিগত কয়েক বছরে বর্ষা মৌসুম ছাড়াও আগাম বন্যায় সোমেশ্বরীর তাণ্ডবে পৌর শহরের বিরিশিরি এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়। বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, গৃহপালিত পশুসহ ফসলহানি হয় প্রতিবছর।
এই অবস্থায় সোমেশ্বরীর তীর ঘেঁষে ঘোরাইত থেকে কানিয়াইল পর্যন্ত বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংরক্ষণ ও পুনর্নির্মাণে কোনো উদ্যোগ নেয়নি সরকার। ফলে এলাকাবাসী নিজেরাই এগিয়ে এসেছে বাঁধটি নির্মাণে।
বাঁধ বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ডেভিড অনুপ সাংমা জানান, প্রায় সাত লাখ টাকা ব্যয় ধরে কাজে হাত দেন তাঁরা। নিজেরা চাঁদা দেওয়াসহ এলাকায় থাকা বিভিন্ন এনজিওর সহযোগিতা নিয়ে বুধবার সকাল থেকে প্রায় এক হাজার এলাকাবাসী শুরু করে বাঁধ নির্মাণের কাজ। এই নির্মাণকাজ চলে শুক্রবার পর্যন্ত।
বাঁধ নির্মাণকাজ পরিদর্শনে এসে স্থানীয় সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাস বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মাধ্যমে বিরিশিরি তথা দুর্গাপুর এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
বাঁধ বাস্তবায়ন কমিটির সম্পাদক রঞ্জিত দেবনাথ জানান, এলাকাবাসী যে বাঁধ নির্মাণ করছে, তা সাময়িক রক্ষায় কাজে আসতে পারে। তাই এখানে সরকার দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করবে এমনটাই দাবি এলাকাবাসীর।
এদিকে এই বাঁধ নির্মাণে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করেছেন আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাশ্রম সংস্থার কয়েক সদস্য। কোরিয়ান নাগরিকরা এখানে কাজ করতে পেরে খুশি বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে সহযোগিতা দিয়েছেন দুর্গাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান এমদাদুল ইসলাম খান ও পৌর মেয়র স ম জয়নাল আবেদীন।