বিদেশি প্রভুদের নির্দেশে বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডব : হানিফ
বিদেশি প্রভুদের নির্দেশেই বিএনপি-জামায়াত জোট তাণ্ডব চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ। আজ সোমবার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির কার্যালয়ে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
হানিফ বলেন, ২০-দলীয় জোটের অবরোধ ও হরতাল প্রত্যাহার করলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পেট্রলবোমা হামলা বন্ধ করতে পারবে সরকার।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিজেকে অবরুদ্ধের নাটক করে গোটা জাতির ওপর অবরোধ কর্মসূচি চাপিয়ে দিয়েছেন বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া তথাকথিত অবরোধ এবং মাঝেমধ্যে বিক্ষিপ্ত আকারের হরতাল কর্মসূচি দিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।
হানিফ আরো বলেন, ‘তাঁর (খালেদা জিয়ার) এ কর্মসূচিগুলো বাংলার জনগণ প্রত্যাখ্যান করল, ঠিক তখন থেকেই মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য তিনি এ অবরোধ ও হরতাল সফল করার লক্ষ্যে পেট্রলবোমা দিয়ে মানুষ হত্যার এক নতুন ফর্মুলা চালু করেছেন।’
হরতাল-অবরোধ ও নাশকতা বন্ধের প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘আমরা বিএনপিকে বারবার অনুরোধ করেছিলাম। আপনারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা বন্ধ করুন। বরাবরের মতো আজও আমরা এ হত্যার বিরুদ্ধে নিন্দা করছি। বিএনপিকে বরাবরের মতো আজও আহ্বান জানাচ্ছি, মানুষ পুড়িয়ে কোনো দাবি আদায় করা যাবে না।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শক্ত হাতে সহিংসতা ও নাশকতা নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন হানিফ। তিনি জানান, ২০-দলীয় জোটের হরতাল ও অবরোধ চলাকালে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পেট্রলবোমা হামলায় গত ৩৫ দিনে ৭২ জন মারা গেছে। যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও নাশকতার জন্য বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সুশীলসমাজের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যখন আমরা বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি মানুষ পুড়িয়ে হত্যা বন্ধ করার জন্য, ঠিক সে সময় আমাদের দেশের কিছু কৃষি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সুশীলসমাজের বক্তব্যে মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছে। যাঁরা তাঁদের কর্ম দিয়ে জাতিকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করছেন, যাঁরা জাতিকে সুশিক্ষিত করেন, জাতি গঠনে তাঁদের বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল, এমনকি অনেক সময় তাঁরা জাতিকে ভালো পরামর্শও দিয়েছিলেন। কিন্তু রাজনীতির ক্ষেত্রে বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শ সুখকর হিসেবে আসেনি।’ এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘ফেরারি অবস্থায় লন্ডনে বসে তারেক রহমান নানাভাবে, নানা সময় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার তথ্য দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর মা খালেদা জিয়া পরিকল্পিতভাবে এসব কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছেন এবং নাশকতা চালাচ্ছেন। বিভক্তির যে জাল বিস্তার করা হয়েছে, কীভাবে তা দূর করা হবে তা আমাদের জানা নেই। যারা হরতাল-অবরোধ দিয়ে মানুষ হত্যা করছে, তাদের এ হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে না বলে বুদ্ধিজীবীরা সংলাপ সংলাপ করে ধুয়া তুলছেন। তাঁরা এসব করে বিএনপির অপকর্মকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন। মানুষ এসব বুদ্ধিজীবীর কাছ থেকে অনেক কিছু আশা করেন। যারা এসব করছে তাদের বিরুদ্ধে বুদ্ধিজীবীরা সোচ্চার হবেন। তাদের নিন্দা জানাবেন এবং যারা এ ধরনের কাজ করে তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করবেন।’
হানিফ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, আজকের সংকট যদি হয় পেট্রল দিয়ে মানুষ হত্যা করা, তবে এর দায় কে নেবে? বিএনপি-জামায়াত বলছে তারা পেট্রলবোমা নিক্ষেপের সঙ্গে জড়িত না, যদি তাই না হয় তবে তাদের সঙ্গে সংলাপে বসে সংকট নিরসন হবে না। আমাদের মূল লক্ষ্য পেট্রলবোমা হামলাকারীদের নিরসন করা, নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করা।