প্রধান শিক্ষককে লাঠিপেটা, আ. লীগ নেতাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নাটোরের সিংড়া উপজেলায় এক প্রধান শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
এদিকে মারপিটের ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তাঁর অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন করানোর অভিযোগ উঠেছে ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
গত ২১ জানুয়ারি সিংড়া উপজেলার ক্ষীদ্র বড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে স্কুলে ঢুকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে তিনি বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহত প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, তাঁর স্কুলে জাল সনদপত্র দিয়ে শাহীন রেজা নামের এক শারীরিক শিক্ষক চাকরি নেন। পরে বিষয়টি ধরা পড়লে ২০১৪ সালে তাঁর চাকরি চলে যায়। এ ঘটনায় স্থানীয় চৌগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহেদুল ইসলাম ভোলা তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে চাকরিচ্যুত শিক্ষককে চাকরিতে পুনর্বহাল অথবা পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করতে থাকেন। তিনি বরাবর অপারগতা প্রকাশ করতে থাকেন। এর জের ধরে ২১ জানুয়ারি ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম ভোলার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা স্কুলে ঢুকে তাঁকে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করে।
এ ঘটনায় আহত প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের ভাই রুহুল আমিন বাদী হয়ে সোমবার রাতে সিংড়া থানায় একটি হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে এজাহার দায়ের করেন। মঙ্গলবার দুপুরে এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করে পুলিশ।
মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম ভোলা ছাড়াও অন্য আসামিরা হচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জাবেদ আলী, জেলা পরিষদের সদস্য সালাউদ্দিন আল আজাদ, আওয়ামী লীগ কর্মী বাবু ও শাহীন রেজা।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন মণ্ডল জানান, মামলাটি তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আহত প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, মামলা দায়েরের পর বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ইউপি চেয়ারম্যান ভোলার তত্ত্বাবধানে আজ দুপুরে স্কুল প্রাঙ্গণে তাঁর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করানো হয়েছে।
এদিকে ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম ভোলা জানান, প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ মিথ্যা। ঘটনার দিন প্রধান শিক্ষক স্কুলেই উপস্থিত ছিলেন না। এ কারণে তাঁকে মারপিটের প্রশ্নই আসে না।
হাসপাতালে চিকিৎসার বিষয় জানতে চাইলে ভোলা জানান, বিষয়টি সাজানো নাটক। মানববন্ধনের বিষয়েও তাঁর সম্পৃক্ততা নেই। স্থানীয় লোকজন এটি করেছে বলে দাবি করেন ভোলা। তিনি দায়ী থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা তিনি মেনে নেবেন বলে জানান।