গণধর্ষণের পর হত্যা, দেবর ও শ্বশুর আটক
শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার চরজালালপুর এলাকায় রিনা আক্তার (১৮) নামের এক গৃহবধূকে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ২টায় গোসাইরহাট থানার পুলিশ টেকপাড় খাল থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে।
ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ওই গৃহবধূর শ্বশুর ও চাচাতো দেবরকে আটক করেছে। নিহত রিনা আক্তারের বাবার বাড়ির ঠিকানা পুলিশ এখনো জানতে পারেনি।
শরীয়তপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সুমন দেব এনটিভি অনলাইনকে জানান, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরকুমারিয়া এলাকার মাস্টারকান্দির জালাল সরদারের ছেলে কাদের সরদার (২৫) ঢাকার পোশাক তৈরির কারখানায় কাজ করেন। গত জানুয়ারি মাসে ওই কারখানার শ্রমিক রিনা আক্তারকে বিয়ে করেন কাদের।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনা অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, দুই মাস ধরে কাদের স্ত্রী নিয়ে গোসাইরহাট উপজেলার চরজালালপুর আশ্রায়ন প্রকল্পে বসবাস করতে থাকেন। গত রোববার কাদের ঢাকায় যাওয়ার কথা বলে স্ত্রীকে নিয়ে বাসা থেকে বের হন। পরের দিন সকালে রিনাকে ছাড়াই বন্ধুদের নিয়ে তিনি বাড়িতে ফিরে এলে প্রতিবেশীরা রিনার খোঁজ করেন। ওই সময় কাদের ও তাঁর বন্ধুদের আচরণ সন্দেহজনক মনে হওয়ায় সোমবার দুপুরে গ্রামের মানুষ রিনার নিখোঁজের বিষয়টি স্থানীয় পুলিশকে জানায়। পুলিশ খোঁজ নিতে এলে কাদের ও তাঁর বন্ধুরা এলাকা থেকে পালিয়ে যান।
পালানোর সময় কাদের সরদারের চাচাতো ভাই রুবেল সরদারকে ভেদরগঞ্জ উপজেলার আলুর বাজার ফেরিঘাট থেকে সোমবার রাতে আটক করে পুলিশ।
এএসপি সুমন দেব জানান, আটক রুবেল থানায় স্বীকার করেন, রোববার রাতে কাদের ও তাঁর তিন বন্ধু রিনাকে মেঘনা নদীর তীরে একটি নির্জন স্থানে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার পর রিনার মৃতদেহ মেঘনা নদীতে ফেলে দেন।
রুবেলের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার দুপুরে গোসাইরহাট থানার পুলিশ মেঘনা নদীর সংযোগ থাকা টেকপাড় খাল থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে।
সহকারী পুলিশ সুপার সুমন দেব আরো জানান, হত্যাকাণ্ডের পর লাশ গুম করার জন্য শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে মেঘনা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাদের সরদারের বাবা জালাল সরদারকে আটক করা হয়েছে। রিনার স্বামী কাদেরসহ বাকি অপরাধীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।