সাবধানতা অবলম্বন করলে জিহাদ পাইপে পড়ত না
পাইপে পড়ে শিশু জিহাদ নিহত হওয়ার মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান বলেছেন, আসামিরা যথাযথ সাবধানতা অবলম্বন করলে এই দুর্ঘটনা ঘটত না।
বিচারক বলেন, ‘আসামিদের দোষী মন রয়েছিল। তাই তারা সাজা পাওয়ার হকদার।’ এর পরই বিচারক ছয় আসামির মধ্যে চারজনের প্রত্যেককে ১০ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেন।
দণ্ডাদেশ পাওয়া চারজন হলেন রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ উপসহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এসআর হাউসের মালিক মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে আবদুস সালাম, কমলাপুর রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন ও ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার জাফর আহমেদ সাকি।
খালাস পেয়েছেন সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) দীপক কুমার ভৌমিক ও সহকারী প্রকৌশলী-২ মো. সাইফুল ইসলাম।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ড. মো. আখতারুজ্জামান যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায়ের দিন ধার্য করেন। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ১১ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। মামলার আসামিদের সবাই জামিনে ছিলেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর বিকেল ৩টার দিকে জিহাদ পাইপে পড়ে যায়। পরে গণমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। রাতভর ফায়ার সার্ভিস তাদের উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে ব্যর্থ হয়।
পরের দিন দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান শিশুটি পাইপে নেই বলে ঘোষণা দিয়ে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করেন। এর পর শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ করেন মজিদ, লিটু ও আনোয়ার নামের তিন ব্যক্তি। তাঁদের তৈরি একটি ক্যাচারের মাধ্যমে জিহাদকে টেনে তোলা হয়।
ওই ঘটনায় জিহাদের বাবা নাসির উদ্দিন ফকির ২০১৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর একটি মামলা করেন। পরে গত বছরের ৩১ মার্চ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতে ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। অভিযোগপত্র দাখিলের পর মামলাটি বিচারের জন্য বিশেষ জজ আদালতে বদলি হয়ে আসে।
গত বছরের ৪ অক্টোবর ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
আজ রায়ের পর এক প্রতিক্রিয়ায় জিহাদের বাবা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, তিনি রায়ে অসন্তুষ্ট। এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন।