রাষ্ট্রপক্ষের ব্যর্থতায় ২ আসামি খালাস : আদালত
পাইপে পড়ে শিশু জিহাদ নিহত হওয়ার মামলায় দুই আসামির খালাস পাওয়ার পেছনে রাষ্ট্রপক্ষের ব্যর্থতা রয়েছে বলে মত দিয়েছেন এ মামলায় রায় প্রদানকারী আদালতের বিচারক।
আজ রোববার ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় দেন। এ সময় বিচারক বলেন, ‘আসামি সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) দীপক কুমার ভৌমিক ও সহকারী প্রকৌশলী-২ মো. সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। তাই তাঁদের সাজা দেওয়া আদালত সমীচীন মনে করেন না। তাই তাঁদের এ মামলায় খালাস দেওয়া হলো।’
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শওকত আলম তা মানতে নারাজ। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এ ব্যর্থতা আমাদের নয়। সাক্ষ্যপ্রমাণে ও আইনের বিষয়ের ওপর আমরা নির্ভর করি। এ ছাড়া সাক্ষ্যপ্রমাণে আমরা দেখব, কোন সাইটে আমাদের ত্রুটি আছে।’
শওকত আলম আরো বলেন, ‘আমাদের দেশে অবহেলার মামলার ক্ষেত্রে এ রায় একটি জলন্ত উদাহরণ। কারণ আমরা এ জাতির কাছে ভালো জিনিস উপস্থাপন করতে পেরেছি। আমরা যে কোনো দায়িত্বে থাকি না কেন আমরা এখন আমাদের দায়িত্বের প্রতি সচেতন হবো।’
এ মামলায় দণ্ডাদেশ পাওয়া চারজন হলেন রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ উপসহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এসআর হাউসের মালিক মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে আবদুস সালাম, কমলাপুর রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন ও ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার জাফর আহমেদ সাকি।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ড. মো. আখতারুজ্জামান যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায়ের দিন ধার্য করেন। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ১১ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। মামলার আসামিদের সবাই জামিনে ছিলেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর বিকেল ৩টার দিকে জিহাদ পাইপে পড়ে যায়। পরে গণমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। রাতভর ফায়ার সার্ভিস তাদের উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে ব্যর্থ হয়।
পরের দিন দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান শিশুটি পাইপে নেই বলে ঘোষণা দিয়ে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করেন। এর পর শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ করেন মজিদ, লিটু ও আনোয়ার নামের তিন ব্যক্তি। তাঁদের তৈরি একটি ক্যাচারের মাধ্যমে জিহাদকে টেনে তোলা হয়।
ওই ঘটনায় জিহাদের বাবা নাসির উদ্দিন ফকির ২০১৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর একটি মামলা করেন। পরে গত বছরের ৩১ মার্চ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতে ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। অভিযোগপত্র দাখিলের পর মামলাটি বিচারের জন্য বিশেষ জজ আদালতে বদলি হয়ে আসে।
গত বছরের ৪ অক্টোবর ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।