বেরোবি এলাকা থমথমে, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ২ মামলা
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) গতকাল শনিবার ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে স্থানীয়দের দফায় দফায় সংঘর্ষের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
শনিবার রাতেই শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সব কার্যক্রম স্থগিত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এ ছাড়া ওই ঘটনায় গতকালই কোতোয়ালি থানায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান শিশির ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসানসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে।
গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান শিশিরের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন ছাত্রলীগকর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের সামনে পার্কের মোড়ে লিফা ফাস্ট ফুড নামের একটি দোকানে গিয়ে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেওয়ায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা দোকানটি ভাঙচুর করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় লোকজন একজোট হয়ে ছাত্রলীগ কর্মীদের ধাওয়া করলে উভয় পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষে পুলিশের এক উপপরিদর্শক (এসআই), এক ফটোসাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রাতেই পার্কের মোড় ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক মাসুদ রানা ও লিফা ফাস্টফুডের মালিক মাজেদুল ইসলাম লাভলু বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় দুটি মামলা করেন। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি শিশির ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসানসহ ছাত্রলীগের ১৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এ মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
আজ রোববার সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পার্কের মোড় এলাকার সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি। তা ছাড়া শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও ছিল কম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ কে এম নূর উন নবী বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করব। খতিয়ে দেখা হবে কারা এর পেছনে ইন্ধন জুগিয়েছে। যদি তারা শিক্ষার্থী হয়, তাহলে একাডেমিক নিয়ম অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে যাদের নাম উঠে আসবে তারা যদি শিক্ষার্থী না হয়, তাহলে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবস্থা নিতে বলব।’
উপাচার্য আরো বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতির ছাত্রত্ব নেই। আর সাধারণ সম্পাদকেরও পড়ালেখা শেষ হয়ে গেছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে আমরা একাডেমিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারব না।’