সাকা চৌধুরীর আপিলের শুনানি বুধবার পর্যন্ত মুলতবি
মানবতাবিরোধী অপরাধে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর আপিলের শুনানি আগামীকাল বুধবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়। পরে ১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত শুনানির পর আগামিকাল পর্যন্ত কার্যক্রম মুলতবি করা হয়।
বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
এ বিষয়ে সাকা চৌধুরীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ৯টি অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে সাজা দেওয়া হয়েছিল। এসব সাজার বিষয়ে আজ নথি উপস্থাপন করেছি।’
এর কিছুক্ষণ আগে জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন আপিলের বিভাগের এই বেঞ্চ।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন শুনানি শুরু হওয়ার আগে মামলার প্রস্তুতির জন্য চার সপ্তাহ সময় আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সময় আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘বিচার বিঘ্নিত করার জন্যই সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে। তাই সময় আবেদন নাকচ করে শুনানি শুরু করা হোক।’
এর পরিপ্রেক্ষিতে সময় আবেদন নাকচ করে দিয়ে শুনানি শুরু করেন আদালত।
শুনানিতে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে খন্দকার মাহবুব হোসেন ও আইনজীবী এস এম শাহজাহান আছেন। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এর আগে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিএনপি নেতাকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এ সময় সালাউদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে আনা ২৩ অভিযোগের মধ্যে ১৭টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। এসব অভিযোগ থেকে খালাস চেয়ে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৯ অক্টোবর আপিল করেন সাকা চৌধুরী।
হরতালের আগের রাতে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হন বিএনপির এই নেতা। এর পর ১৯ ডিসেম্বর তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
২৩টির মধ্যে নয়টি অভিযোগে সালাউদ্দিন কাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ নয়টিই গণহত্যার অভিযোগ। অভিযোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো রাউজানের মধ্যগহিরা, জগৎমল্লপাড়া, রাউজানের ঊনসত্তরপাড়া, শাকপুরা প্রভৃতি গ্রামে গণহত্যা।
মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানাধীন সাকা চৌধুরীর পৈতৃক বাড়ি গুডস হিল নির্যাতন কেন্দ্রে তাঁর নেতৃত্বে অনেক ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে আটকে রেখে নির্যাতন ও হত্যা করা হতো। এ ছাড়া পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতায় হিন্দু জনগোষ্ঠীর ওপর নিপীড়ন, একাত্তরের ১৩ এপ্রিল কুণ্ডেশ্বরীতে নিজ বাসভবনে নূতন চন্দ্র সিংহকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে।