কোচিংয়ে তিন ছাত্রীকে ‘কিল-ঘুষি’ শিক্ষকের
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার পাথরঘাটা আদর্শ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নৈশকালীন কোচিংয়ে তিন ছাত্রীকে কিল-ঘুষি মেরে ও পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ওই শিক্ষকের নাম মিজানুর রহমান। তিনি পাথরঘাটা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
আহত তিনজন ওই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বর্তমানে তারা নিজ বাড়িতে আছে।
আহত দুই ছাত্রী জানায়, নৈশকালীন কোচিংয়ে মিজানুর রহমান এসে এসে পড়া জিজ্ঞাসা করেন। তিনি ‘তোমরা পড়না কেন?’ বলে প্রথমে কিল-ঘুষি মারেন। পরে বেত দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন তাদের।
আহত এক ছাত্রীর বাবা বলেন, কোচিং চলাকালে তাঁর মেয়েকে কিল-ঘুষি মারেন মিজানুর রহমান। এ সময় তাঁর মেয়ে শ্রেণিকক্ষে লুটিয়ে পড়ে। পরে তিনি খবর পেয়ে তাকে কোচিং থেকে বাসায় নিয়ে যান।
ওই অভিভাবক আরো বলেন, এর আগেও মিজানুর রহমানের হাতে মারধরের শিকার হয়েছে তার মেয়ে। সে সময় স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাঁর মেয়েকে ওষুধ কিনে দেন। পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করলেও মিজানুরের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
আহত ওই ছাত্রীর মা জানান, সহকারী শিক্ষক মিজানুরের কিল-ঘুষি ও পিটুনিতে তাঁর মেয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা পেয়েছে। এ কারণে মেয়েটি স্কুলেও যেতে পারছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক বলেন, এর আগেও মিজানুর রহমানের হাতে মারধরে শিকার হয়েছে বেশ কয়েকজন ছাত্রী। কিন্তু এসব বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করে কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে ওই শিক্ষকের মুঠোফোনে অনেকবার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু বারবারই নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে নারী অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন একটি উন্নয়ন সংগঠনের প্রধান নির্বাহী হোসনে আরা হাসি বলেন, স্কুলে শিক্ষার্থীদের মারধর না করার ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কড়া নির্দেশনা রয়েছে। এ ছাড়া মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রীদের স্পর্শ করা যৌন হয়রানির শামিল। তিনি শিক্ষক মিজানুরের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তার ভাষ্য
কোচিংয়ে অষ্টম শ্রেণির তিন ছাত্রীকে মারধরের বিষয়টি শুনেছেন বলে জানিয়েছেন পাথরঘাটা আদর্শ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তরিকুল ইসলাম রেজা। তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্তে মিজানুর রহমান দোষী সাব্যস্ত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তফা আলম বলেন, বিষয়টি তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে শুনেছেন। এ বিষয়ে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।