মেহেরপুরে হাতুড়িপেটায় আহত যুবকের মৃত্যু
পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে হেরে গেলেন মেহেরপুরে সুমন হোসেন। জেলার গাংনী উপজেলার কাজীপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে তিনি মারা যান।
গত ১৪ জুন স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে গেছে এই সন্দেহে একই গ্রামের আওয়াল হোসেনের হামলায় সুমন হোসেন (৩০) গুরুতর আহত হন। পাঁচদিন চিকিৎসার পর তাঁকে বাঁচানো সম্ভব নয় বলে চিকিৎসকরা জানানোর পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে গতকাল বিকেলে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৪ জুন গাংনীর হাজিপাড়ার বন্দে আলীর বাড়ির সামনে দিয়ে বাইসাইকেল করে যাওয়ার সময় সুমনকে হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে আওয়াল পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন সুমনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে বিকেল পর্যন্ত চিকিৎসায় শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হলে চিকিৎসকরা তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
স্থানীয় সূত্রে আরো জানা গেছে, মাস দুয়েক আগে আওয়ালের স্ত্রী মিনুয়ারা খাতুন বাড়ির লোকজনকে না জানিয়ে ঢাকায় পাড়ি জমান। এ ঘটনায় মিনুয়ারার বাবা আওয়ালের নামে গাংনী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করেন। নিখোঁজের পর মিনুয়ারা ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করছেন বলে আওয়াল খবর পান। এরপর তিনি স্ত্রীকে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন। মিনুয়ারার বাবা ও আওয়ালের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সমঝোতা হলে মিনুয়ারা-আওয়ালের সংসার জীবন আবারও শুরু হয়। কিন্তু আওয়াল সন্দেহ করেন একই গ্রামের সুমন তাঁর স্ত্রীকে ভাগিয়ে ঢাকায় নিয়ে গিয়েছিলেন। বিষয়টি নিয়ে গ্রামে কানাঘুষাও শুরু হয়। এর জের ধরে সুমনকে পেটানো হয়েছে বলে ধারণা করছে গ্রামবাসী।
এ ঘটনায় সুমনের বাবা শমসের আলী বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম হোসেন বলেন, এ ঘটনার পর আওয়ালকে ধরতে কাজীপুর গ্রামে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু টের পেয়ে আওয়াল পাশের কুষ্টিয়া উপজেলার দৌলতপুর উপজেলা সীমান্ত দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে ভারতে চলে গেছেন।