‘সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড তদন্তে সরকার ব্যর্থ’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ বলেছেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড তদন্ত করতে পুলিশ ব্যর্থ হয়েছে, র্যাব ব্যর্থ হয়েছে; সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যর্থ হয়েছে। সুতরাং সরকারই ব্যর্থ হয়েছে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করে এ বিচার আদায় করতে হবে।
আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ডিআরইউর সামনের রাস্তায় এক মানববন্ধনে রফিকুল এসব বলেন। মানববন্ধনে ডিআরইউর সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন, সাবেক সভাপতি শাহেদ চৌধুরী, কবি ও সাংবাদিক নেতা আবদুল হাই শিকদার, কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ, ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, সাব-এডিটরস কাউন্সিল, ডিইউজে, বিএফইউজেসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।
মানববন্ধনে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদাল আহমেদ বলেন, তিন বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো হত্যাকারী কারা বা তাদের মোটিভ কী ছিল, তা জানা যায়নি। এ বিচার না হলে আরো সাংবাদিক এবং সাংবাদিক দম্পতির প্রাণহানি হবে।
ডিআরইউ সমবায় সমিতির সভাপতি মাহমুদুর রহমান খোকন বলেন, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনসহ তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মামলার অগ্রগতি হওয়ার দাবি করেছিলেন। বর্তমানে তাঁদের কাস্টডিতে (জেলহাজতে) এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে প্রকৃত খুনিদের বের করা যাবে। সে সময় তদন্ত প্রক্রিয়ার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত ছিলেন, তাঁদের মধ্যেই রহস্য আছে। তাঁরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে প্রকৃত খুনিদের বের করা সম্ভব হতো। কিন্তু তাঁরা করেননি।
কেন করেননি, সে জন্য তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার। তিনি বলেন, র্যাব একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স। তারা কোনো তদন্তকারী সংস্থা নয়। মামলা তদন্তে তাঁদের অভিজ্ঞতা নেই। কিন্তু তার পরও তাঁদের কেন তদন্ত করতে দেওয়া হলো, সে বিষয়টিও খুঁজে দেখতে হবে।
মাহমুদুর রহমান খোকন বলেন, ‘সাগর-রুনির বাসা থেকে মোবাইল ও ল্যাপটপ হারিয়ে যায়। কিন্তু গোয়েন্দারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না কেন? শর্ষেতেই ভূত আছে, এটা তাড়াতে হবে।’
সমাবেশে মেহেরুন রুনির ভাই নওশের রুমান ও রুনির ছেলে মেঘ উপস্থিত ছিল।
মানববন্ধনে বক্তব্য শেষে নওশের রোমান জানান, আজ সকালে সাগর-রুনির ছেলে মেঘ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে স্মারকলিপি দিয়ে এসেছে। সাংবাদিকরা এ বিষয়টিতে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন, এটাই তাঁদের চাওয়া।
নওশের রুমান আরো বলেন, তিন বছরে তাঁদের হতাশা আরও বেড়ে গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও তদন্তকারী সংস্থাগুলোর যে তৎপরতা আগে দেখা গেছে, তা এখন আর নেই। বিচারের আশাও খুব কম।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নওশের রুমান আরো বলেন, যে ফ্ল্যাটে সাগর-রুনিকে খুন করা হয়েছিল, সেটিকে মালিকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ ধরনের হস্তান্তর নিয়ে তাঁদের প্রশ্ন আছে। তিনি বলেন, সাংবাদিক দম্পতি হত্যার পর যে গ্রিলটা কাটা ছিল, সেটিসহ বাসার বেশ কিছু অংশ র্যাব মেরামত করেছে। কিন্তু তদন্ত শেষ না হওয়ার আগে এ ধরনের পদক্ষেপ কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারের নিজ বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি।