বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়কে যান চলাচল শুরু
বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। সড়কে বন্যার পানি কমে যাওয়ায় বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টা থেকে বান্দরবানের সঙ্গে চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ সচল হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পূরবী বাস সার্ভিসের কাউন্টার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মহসিন।
urgentPhoto
এদিকে গতকাল শুক্রবার রাত থেকে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতির অনেকখানি উন্নতি হয়েছে। জেলা শহরের মেম্বারপাড়াসহ আশপাশের অনেক স্থান থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বন্যাদুর্গত মানুষ ঘরে ফিরতে শুরু করেছে।
তবে বান্দরবানে সাঙ্গু ও মাতা মুহুরী দুটি নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাজালিয়া বরদুয়ার অধিবাসী আবদুল খালেক বলেন, বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় বরদুয়ারাসহ আশপাশের এলাকায় সড়ক থেকে বন্যার পানি নেমে যাচ্ছে। দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টি না হলে সড়ক থেকে পানি একদম কমে যাবে। পানির ওপর দিয়ে কিছু কিছু যানবাহন চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।
পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য জহিরুল ইসলাম বলেন, লামা উপজেলায় নিম্নাঞ্চল এখনো প্লাবিত। মাতা মহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টিপাত কিছুটা কমেছে। লামা উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আজও দুর্গতরা অবস্থান করছেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এস এম শাহেদুল ইসলাম জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায়ও বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে পানি নেমে যাচ্ছে। তবে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনো পুরিপুরি সচল হয়নি। অনেক স্থানে রাস্তায় পানি, পাহাড় ধসে সড়ক ভেঙে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। সরকারিভাবে দুর্গতদের ত্রাণ সরবরাহ করা হচ্ছে।
এদিকে আলীকদম ও থানচি উপজেলায়ও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। থানচি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মারমা বলেন, থানচিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বড়মদক এলাকা। এ ছাড়াও রেমাক্রী ও তীন্দু ইউনিয়নেও ঘরবাড়ি এবং ফলদ বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরী জানান, গত সোমবার থেকে পাঁচদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বান্দরবানে ৫০ হাজারেরও বেশি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। কিন্তু পাহাড়ধসের কারণে রুমা, থানচি উপজেলা সড়কে যানবাহন চলাচল আজও বন্ধ রয়েছে। প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে বন্যার পানি নেমে যাচ্ছে। দুর্গতরাও অনেকে ঘরে ফিরছেন। সরকারি-বেসরকারিভাবে দুর্গতদের ত্রাণ সরবরাহ করা হচ্ছে।
দুর্যোগ পরিস্থিতি নিয়ে আজ শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয় মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রাজনৈতিক ব্যক্তি, গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে জরুরি সভা হয়েছে। সভায় জেলায় বন্যা এবং পাহাড়ধসের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়।