হত্যা মামলার আসামিকে নিয়ে এমপির ইফতার
হত্যা মামলার এক আসামিকে নিয়ে পরপর দুই দিন ইফতার করলেন বরগুনা-২ (বামনা-বেতাগী-পাথরঘাটা) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) শওকত হাচানুর রহমান রিমন। শুক্রবার বরগুনার পাথরঘাটায় এবং গতকাল শনিবার বামনা উপজেলায় আসামিকে নিয়ে ইফতার করেন তিনি।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। হত্যা মামলার চিহ্নিত আসামি হেমায়েত মোল্লাকে সঙ্গে আনায় গতকাল বামনায় হওয়া ইফতার মাহফিলে যোগ দেননি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘ওই মামলায় বেশির ভাগই আমাদের (আওয়ামী লীগ) লোকজন জড়িত। তাদের অনেকেই ওই ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন।’
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৮ অক্টোবর বামনায় দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নৃশংসভাবে খুন হন বরগুনার জেলা প্রশাসকের স্পিডবোটচালক আবদুল জব্বার খান। এ ঘটনায় আবদুল জব্বারের ছেলে নেছার উদ্দিন খান বাদী হয়ে বামনা থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলার ৮ নম্বর আসামি হিসেবে নাম রয়েছে বামনার শফিপুর গ্রামের প্রয়াত কালাই মোল্লার ছেলে হেমায়েত মোল্লার। সেই মামলার অভিযোগপত্রেও তাঁর নাম রয়েছে। মামলার পর থেকেই তিনি ‘পলাতক’।
হত্যা মামলার আসামি সেই হেমায়েত মোল্লাকে সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্রীয় গাড়িতে চড়ে গত শুক্রবার পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের ইফতার পার্টিতে যান শওকত হাচানুর রহমান রিমন। শনিবারও তাঁকে সঙ্গে করে নিয়ে বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ইফতার পার্টিতে যোগ দেন তিনি।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন-অর-রশীদের সভাপতিত্বে এই ইফতার পার্টিতে আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোশাররফ হোসাইন জমাদ্দার, বরগুনা জেলা পরিষদের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য ফৌজিয়া খানম, বামনা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম সাব্বির ফেরদৌস তালুকদার প্রমুখ।
এ বিষয়ে বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বামনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইতুল ইসলাম লিটু বলেন, ‘একজন সংসদ সদস্য যখন হত্যা মামলার আসামিকে প্রশ্রয় দেন, তখন রাজনীতিবিদদের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে জনগণ।’
কাজটি অত্যন্ত নিন্দনীয় উল্লেখ করে লিটু বলেন, ‘এটা এমপি সাহেবের উচিত হয়নি।’
এ বিষয়ে কথা বলতে শওকত হাচানুর রহমান রিমনের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
বরগুনা জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবদুল্লাহ বলেন, মামলাটি তদন্ত করেছে ডিবি। তদন্ত করে দেওয়া অভিযোগপত্রে থাকা আসামিদের একজন হেমায়েত মোল্লা।