‘ইয়াবা রেখে’ চিকিৎসককে গ্রেপ্তার, এসআইয়ের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন
বরগুনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এক উপপরিদর্শের (এসআই) বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে এক ইন্টার্ন চিকিৎসকের পরিবার। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বরগুনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওই এসআইয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়।
ডিবির এসআই মো. আবু জাফরের বিরুদ্ধে ওই পরিবারের অভিযোগ, ইয়াবা উদ্ধারের ‘নাটক সাজিয়ে’ শামীম হোসেন মুসা সরদার (২৭) নামের একজন ইন্টার্ন চিকিৎসককে গ্রেপ্তার ও তাঁর দুই বোনকে নির্যাতন করা হয়েছে।
এই অভিযোগে ওই এসআইয়ের বিরুদ্ধে গতকাল সোমবার মামলাও করেছেন শামীমের মা হালিমা বেগম।
ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে শামীমের বোন সাথী বেগম বলেন, গত শনিবার রাত ১০টার দিকে পশ্চিম হেউলিবুনিয়া গ্রামে তাঁদের বাড়িতে পানি খাওয়ার কথা বলে বরগুনার কয়েকজন চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী প্রবেশ করেন। ঘরে ঢুকেই বরগুনার চরকলোনি এলাকার রাজু ওরফে টায়ার রাজু, জিসান ও খলিলুর রহমান মিলে শামীমের হাতে হাতকড়া লাগায় এবং তাঁকে টানাহেচড়া শুরু করে।
সাথী বলেন, ‘শামীমকে টানাটানির সময় আমি ও আমার ছোটবোন মরিয়ম তাদের বাধা দেই। এ সময় সেখানে এসআই মো. আবু জাফর উপস্থিত হয়ে আমাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন।’
ওই ঘটনার পর শামীমের দুই বোন সাথী ও মরিয়ম বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
সাথী বেগম আরো বলেন, তাঁর স্বামী সদর উপজেলার নলী মাইঠা গ্রামের মো. খলিলুর রহমানের সঙ্গে তাঁদের পারিবারিক বিরোধ চলছে। খলিলের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে একটি যৌতুক আইনে মামলাও করা হয়েছে। ওই বিরোধের জের ধরে খলিলের যোগসাজশে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এসআই আবু জাফর তাঁর ভাইকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় ১০০ ইয়াবা বড়ি উদ্ধারের নাটক সাজান এসআই। পরের দিন সকালে এসআই বাদী হয়ে শামীমের বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় একটি মিথ্যা মামলা (জিআর নম্বর ৩৫৯) করেন।
সংবাদ সম্মেলনে হালিমা বেগম বলেন, তাঁর ছেলে শামীম হোসেন মুসা সরদার বরগুনা হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ থেকে চার বছরের ডিএইচএমএস কোর্স শেষ করে এখন ইন্টার্ন করছেন। তিনি বরগুনায় বিভিন্ন সামাজিক কাজের সঙ্গে জড়িত। তাঁর বিরুদ্ধে কারো কোনো অভিযোগও নেই। ইয়াবা তো দূরের কথা, তিনি কোনো দিন ধূমপানও করেননি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন শামীমের বাবা মো. শাহ আলম সরদার, বোন মরিয়মসহ স্বজনরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিষয়ে মামলা করা হয়েছে।
এসআই আবু জাফরের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি পুলিশ সুপার।