ঈদে বাড়ি ফেরার পথে ট্রাক উল্টে নিহত ১৭
ঈদে বাড়ি ফেরার পথে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় ট্রাক উল্টে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরো ১০ জন।
আজ শনিবার সকাল ৬টার দিকে উপজেলার ঢাকা-রংপুর কলাবাড়ী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন রংপুর হাইওয়ে পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ধীরেন্দ্র চন্দ্র মহাপাত্র।
এএসপি বলেন, নিহতদের বেশির ভাগই তৈরি পোশাক শ্রমিক। ঈদে গাজীপুর থেকে ট্রাকে করে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা।
নিহতদের বেশির ভাগের বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের বত্রিশ হাজারি গ্রামে। বেশির ভাগই ত্রিশোর্ধ্ব তরুণ-তরুণী। তাঁরা গাজীপুরে তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
এঁরা হলেন কহিনূর ইসলাম, বেগম (১০), জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে মজনু মিয়া (২৫), দেলোয়ার হোসেন, আনিসুজ্জামান, জসীম উদ্দিন, ঝন্টু মিয়ার মেয়ে সুবর্ণ আক্তার (৯), শহীদুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন, সাদ্দাম হোসেন, মনির হোসেন, রফিকুল ইসলাম, একরাম আলীর ছেলে খলিলুর রহমান, রবিউল ইসলাম, নাসিমা আক্তার ও আজিজুর রহমান। তাঁদের সবার লাশ দুপুরে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। একজনের লাশ শনাক্ত না হওয়ায় এখনো মর্গে রাখা হয়েছে।
আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। হতাহতদের উদ্ধারে পুলিশের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা কাজ করেন। দুপুরে উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে।
এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের ২০ হাজার টাকা এবং আহতদের প্রত্যেককে ১০ হাজার করে টাকা করে সহায়তা দিয়েছেন রংপুরের জেলা প্রশাসক অহিদুজ্জামান।
এ ছাড়া ঘটনা তদন্তে হাইওয়ে পুলিশ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এর প্রধান করা হয়েছে রংপুর-বগুড়া হাইওয়ে পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে।
দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে যাওয়া কহিনূর ইসলামের স্ত্রী (৩৫) ও আরেক নারী (২৮) সকাল সাড়ে ৮টায় এনটিভি অনলাইনকে জানান, তাঁরা রাতে গাজীপুর থেকে সিমেন্ট ভর্তি এই ট্রাকে উঠেছিলেন। চালক রাতভর গাড়ি চালান। তিনি মাঝে মাঝেই ঝিমুচ্ছিলেন। দুর্ঘটনাস্থলের কয়েক কিলোমিটার আগে এসে চালক গাড়ি চালানোর জন্য তাঁর সহকারীকে (হেলপার) দেন।
চালকের সহকারী প্রথমে ভালোভাবে চালালেও পরে তিনিও ঝিমুনি শুরু করেন। এ কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন বেঁচে যাওয়া দুই নারী। তাঁরা জানান, দুর্ঘটনার সময় তাঁরা ট্রাকের কেবিনে ছিলেন। এ কারণেই বেঁচে গেছেন।
ট্রাকে সিমেন্টের উপর অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের বেশির ভাগই তৈরি পোশাক শ্রমিক হিসেবে গাজীপুরের বিভিন্ন কারখানায় কাজ করতেন। ঈদের ছুটিতে তাঁরা বাড়ি ফিরছিলেন। বেশির ভাগের বাড়িই রংপুরের বিভিন্ন উপজেলায় বলে জানান পুলিশ ও আহতরা।
এএসপি ধীরেন্দ্র চন্দ্র মহাপাত্রও এনটিভি অনলাইনকে আহতদের বরাত দিয়ে বলেন, চালকের ঝিমুনির কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।