পদ্মা সেতুতে নিয়োগ : টাকা নিয়ে ঠিকাদার হাওয়া
পদ্মা সেতু প্রকল্পে শ্রমিক নিয়োগের কথা বলে একজন ব্যক্তি দুই লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এই অভিযোগে ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আজ সোমবার সাতক্ষীরার একটি আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী শ্রমিকরা। আদালত বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে জেলার তালা উপজেলার মাগুরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী তালার মাগুরা গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে করা মামলায় উল্লেখ করেন, ‘সাতক্ষীরা শহরের গোলাম কাদির বুলবুল নামের একজন ব্যক্তি নিজেকে পদ্মা সেতুর সাব কন্ট্রাক্টর পরিচয় দিয়ে জেলার বিভিন্ন গ্রামের ২৮০ জন সাধারণ শ্রমিককে পদ্মা সেতু প্রকল্পে নিয়োগ দেওয়ার ঘোষণা দেন। মাসিক ২০ হাজার টাকা করে বেতন, বছরে দুটি উৎসব ভাতা এবং বিনা খরচে থাকার তাঁদের প্রলোভন দেন। বুলবুল জানান, এজন্য প্রত্যেকের দরকার মেডিকেল ফিটনেস। এই ফিটনেস সার্টিফিকেট ঢাকার অনামিকা হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে নিজে গিয়ে সংগ্রহ করতে হবে বলেও জানান বুলবুল।
এদিকে শ্রমিকরা ঢাকায় গিয়ে মেডিকেল ফিটনেস সার্টিফিকেট সংগ্রহের বিকল্প জানতে চাইলে তাঁদের বুলবুল জানান, তাঁরা মাথাপিছু দুই হাজার টাকা দিলে তিনি নিজেই তা এনে দিতে পারবেন। এ কথা বলে তাঁদের কাছ থেকে দুই লক্ষাধিক টাকা আদায় করেন। এ সময় তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে কথিত ফিটনেস পেপার্স, আইডি কার্ডের ফটোকপি, নাগরিকত্ব ও অভিভাবকের অনাপত্তিপত্রসহ কাগজপত্র গ্রহণ করেন বুলবুল।
এদিকে এই টাকা ও কাগজপত্র নেওয়ার পর এক মাসেরও বেশি সময় পার হলেও তা ফেরত অথবা পদ্মা সেতু প্রকল্পে কাজ দেওয়ার ব্যাপারে ঢিলেমি করতে থাকেন বুলবুল। এ নিয়ে শ্রমিকদের সাথে তাঁর কয়েক দফায় ঝগড়া-বিবাদও হয়েছে। এ সময় বুলবুল ‘আমার সময় মতো টাকা অথবা কাজ দেব’ বলে শ্রমিকদের জানান। এরপর থেকে তাঁর মুঠাফোন বন্ধ। এমনকি বাড়ি থেকেও উধাও বুলবুল।
ভুক্তভোগী এসব শ্রমিকের মধ্যে রয়েছেন মাগুরার তোফাজ্জল ও আসাদুল, বেনেরপোতার শাহনাজ গাজী, ধুলন্ডার মুজিবর, বাপী চক্রবর্তী, বিপ্লব দাস, তপন দাস, মাহমুদপুরের হাবিবুর রহমান ও মনিরুল, কানাইদিয়ার উজ্জ্বল দাসসহ অনেকেই।
শ্রমিকরা জানান, বারবার তাগাদা দিয়েও টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে তাঁরা তালা বিচারিক হাকিম আদালতে আজ একটি মামলা করেছেন। বিচারিক হাকিম মো. এরশাদ আলী মামলাটি আমলে নিয়ে তা তদন্তের জন্য মাগুরা ইউপি চেয়ারম্যান এস এম আইয়ুব আলীকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এসব বিষয়ে জানতে ঠিকাদার বুলবুলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি।