হাজারো স্বপ্নে আলোকিত মেহেরপুরের আকাশ
সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী মেহেরপুর গড়ার প্রত্যয়ে ফানুস উৎসবের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে ‘স্বপ্ন’ নামের একটি সংগঠন। সহস্রাধিক ফানুস ওড়ানোর ফলে মেহেরপুরের রাতের আকাশ হঠাৎ রঙিন আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর মেহেরপুর শহরের শহীদ সামসুজ্জোহা পার্কে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ‘এসো স্বপ্ন দেখি স্বপ্ন দেখাই, স্বপ্ন দেখি দেশটা গড়ি’ স্লোগানে স্বপ্নের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে ফানুস উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মেহেরপুরে এই প্রথম এই ধরনের উৎসব করা হলো। একসঙ্গে এত বেশি ফানুস বাংলাদেশের আর কোথাও ওড়েনি বলে দাবি করেছেন আয়োজকরা।
জাগো মেহেরপুরের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলামের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর সংগঠনটির শুভকামনা জানিয়ে বক্তব্য দেন মেহেপুরের জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ, পৌরসভার মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন, সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী সৈয়দ মোনালিসা শিলা, পৌর মেয়রের স্ত্রী আরিফা আক্তার রুশি, মেহেরপুর নিউজের সম্পাদক পলাশ খন্দকার, মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক (অব.) মামুনুর রহমান, মেহেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক (অব.) নুরুল ইসলাম, সেভ দ্য চিলড্রেনের সিনিয়র ম্যানেজার ফারুক হোসেন, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী।
অতিথিদের বক্তব্যের মাঝে মাঝে চলতে থাকে সংগীত, নৃত্য ও কবিতা আবৃত্তি। এর মধ্যে সাংবাদিক তুহিন আরণ্যকে সভাপতি ও শোয়েব রহমানকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে ‘স্বপ্ন’ সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করা হয়।
এ সময় মনের স্বপ্নগুলোকে অল্প কথায় ফানুসে লিখে আকাশে উড়িয়ে দেওয়া হয়। কেউ লেখেন মাকে নিয়ে, কেউ বাবাকে, কেউ লেখেন গণতন্ত্রের কথা, কেউ মাদকমুক্ত মেহেরপুরের কথা। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত তিন ধাপে সহস্রাধিক ফানুস ওড়ানো হয়। এতে ওই এলাকার আকাশে হঠাৎ যেন রঙিন বাতি জ্বলে ওঠে। হাজারো স্বপ্নের কথা নিয়ে ফানুসের আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে শহরের আকাশ।
স্বপ্ন সংগঠনের সভাপতি তুহিন আরণ্য বলেন, ‘মেহেরপুরবাসীর ছোট ছোট স্বপ্নগুলো নিয়ে আমাদের পথচলা শুরু হলো। আমরা সব স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য মেহেরপুরের সবাইকে নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করছি।’
তুহিন আরণ্য জানান, ফানুস উৎসবে অংশগ্রহণ করার জন্য ৩০ টাকা দিয়ে আড়াই হাজার মানুষ নিবন্ধন করে। তারা ছোট ছোট ভাগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত তিন ধাপে সহস্রাধিক ফানুস ওড়ায়। প্রতিটি ফানুসের সঙ্গে একেকজনের স্বপ্নের কথা সংক্ষেপে লেখা ছিল।
মোহাইমিনুর রহমান আবির ও জিনিয়া শারমিনের সঞ্চালনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি পরিবেশন করেন সুমনা রহমান, ওয়াহিদা রহমান পিংকি, সোহাগ ও তার দল, রেজওয়ান বন্যা দিশা, মীর শিশির ও তানিম মাহমুদ। পার্কে সমবেত শত শত দর্শক অনুষ্ঠানটি উপভোগ করে।