ব্রাজিলের গম নিতে বাধ্য না করার নির্দেশ
ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গম সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ কাউকে জোর করে দেওয়া যাবে না। এর আগে কেউ এটি ক্রয় করে থাকলে বা কাউকে দেওয়া হলে তা যদি তারা ফেরত দিতে চান, তাহলে সরকারকে তা ফেরত নিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে আজ বুধবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের যৌথ হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস শুনানিতে বলেন, দুই লাখ পাঁচ হাজার টন গমের মধ্যে প্রায় পৌনে দুই লাখ টন গম বিতরণ হয়ে গেছে। এগুলো খাওয়ার পর কেউ অসুস্থ হয়েছে, এমন কোনো রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। গমে পোকামাকড় রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। সামান্য কীট রয়েছে, যা স্প্রে করলে চলে যায়।
এ সময় আদালত বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কি খাদ্যের সঙ্গে কীটপতঙ্গ খায়?
রিটকারী আইনজীবী মাহবুবউদ্দিন খোকন বলেন, কীটপতঙ্গ নয়, পোকামাকড়েরও চিহ্ন রয়েছে, যা চীন দেশের মানুষ খেয়ে থাকে। বাংলাদেশের মানুষের পক্ষে সেটা খাওয়া অনুপযুক্ত।
গত ৫ জুলাই ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গমের বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গম পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়, এটি খাওয়ার উপযোগী। তবে এতে কিছু কীটপতঙ্গ থাকলেও তা স্প্রে করলে চলে যাবে।
গত ২৯ জুন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পচা গম আমদানি করা হয়েছে দাবি করে তা তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিটের বিবরণে বলা হয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ব্রাজিল থেকে সম্প্রতি সরকার প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় করে বিদেশ থেকে দুই লাখ টন পচা-নষ্ট গম আমদানি করা হয়েছে।
পরে ৩০ জুন এই রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গম খাওয়ার উপযুক্ত কি না, তা যাচাই করে প্রতিবেদন দাখিল করতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
রিটকারীর পক্ষে ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস শুনানিতে অংশ নেন।
সম্প্রতি ব্রাজিল থেকে আনা গমের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ‘দেখতে খারাপ’ এসব গম খাবারের অনুপযোগী। গমের মান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। তবে গত ২১ জুন জাতীয় সংসদে ৩০০ বিধিতে দেওয়া এক বিবৃতিতে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম দাবি করেন, খাদ্য অধিদপ্তরে নিম্নমানের গম আমদানির বিষয়ে যেসব কথাবার্তা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন।
সে সঙ্গে গত ২৪ জুন ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গমের পুনঃপরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, পচা বা মানুষের খাবার অনুপযোগী কোনো গম পাওয়া যায়নি।