‘শুকনা খাবার খেয়ে আছেন খালেদা জিয়া’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুকনা খাবার খেয়ে আছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, পুলিশ খাবার নিয়ে ঢুকতে না দেওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তা শায়রুল কবীর খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গত রাত থেকে আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে শুকনা খাবার খেয়েই আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।’
শায়রুল কবীর জানান, আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পর থেকে প্রতিদিন আসরের নামাজের পর দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। গতকালও সেই দোয়া মাহফিলের জন্য আনা তবারকের শুকনা খাবার খেয়ে দিন পার করেছেন তাঁরা।
তবে খালেদা জিয়া সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন শায়রুল কবীর। ব্যক্তিগত চিকিৎসক নিয়মিত তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজখবর রাখছেন।
গণমাধ্যম শাখার আরেক কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার অভিযোগ করেন, ‘গতকাল রাতে খালেদা জিয়ার ভাই সাঈদ এস্কান্দরের বাসা থেকে তাঁর জন্য রান্না করা খাবার নিয়ে এলে তা ভেতরে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। এর পর থেকে খালেদা জিয়ার জন্য আর কোনো খাবার আসেনি।’ তিনি জানান, চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করেন, তাঁদের জন্য বাইরে থেকে খাবার রান্না করে আনা হয়। গত বুধবার রাত ৮টার দিকে রাতের খাবার এলে তা ভেতরে ঢুকতে দেয়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এর পর থেকে আর কোনো খাবারই তারা ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে না।
দিদার বলেন, ‘আজ দুপুর ১টায় খাবার ও পানি নিয়ে একটি ভ্যান গুলশান কার্যালয়ের ফটকে আসে। আধা ঘণ্টা ভ্যানটিকে দাঁড় করিয়ে রেখে পরে সেটিকে নিয়ে যায় পুলিশ।’
খাবারের ভ্যান যখন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তার কাছে এসব খাবার কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তা সাংবাদিকরা জানতে চান। এতে প্রথমে তারা কোনো কিছু বলতে রাজি হয়নি। পরে নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসা করুন। আমরা কিছু জানি না।’
এ ব্যাপারে জানতে কয়েকবার গুলশান থানায় যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও থানার ওসি ও দায়িত্বরত কর্মকর্তা ফোন ধরেননি।
খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে খাবার ঢুকতে না দেওয়ার বিষয়টি জাতিসংঘেও উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে দুপুরের ব্রিফিংয়ে (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোর) মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফান ডুজারিককে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করেন এক সাংবাদিক। এ পরিস্থিতিকে ‘অমানবিক’ আখ্যা দিয়ে জাতিসংঘের মুখপাত্রের মন্তব্য জানতে চান তিনি।
উত্তরে মুখপাত্র বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে মহাসচিব উদ্বিগ্ন এবং তিনি চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছেন। আর এসব বিষয় সহকারী মহাসচিব তারানকো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।’
রাজধানীর গুলশানে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গত ৩ জানুয়ারি থেকে আছেন বিএনপির চেয়ারপারসন।