২০ হাজার টাকার জন্য ফুফুকে খুন, তরুণের যাবজ্জীবন
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় ২০ হাজার টাকা না পেয়ে ফুফুকে হত্যার দায়ে হাফেজ নান্নু সিকদারকে (৩৫) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আজ বুধবার দুপুরে চাঁদপুরের জেলা ও দায়রা জজ সালেহ উদ্দিন আহমদ এ রায় ঘোষণা করেন।
হত্যার শিকার লায়লা বেগম (৭৫) মতলব উত্তর উপজেলার উত্তর নাওড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। আসামি হাফেজ নান্নু সিকদার একই উপজেলার এখলাসপুর ইউনিয়নের নয়ানগর গ্রামের বাসিন্দা।
চাঁদপুরের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. আমান উল্লাহ মামলার বরাত দিয়ে জানান, ২০১৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে সিকদার তাঁর ফুফু লায়লা বেগমের বাড়িতে যান। লায়লার ছেলেরা ঢাকায় থাকার কারণে তিনি গ্রামের বাড়িতে একাই থাকতেন।
ফুফুর বাড়িতে অবস্থানকালে রাতের খাবার শেষে ফুফুর কাছে ২০ হাজার টাকা ধার চান সিকদার। কিন্তু টাকা নেই বলে জানান লায়লা। দুজনে ঘুমানোর পর রাত ১টার দিকে লায়লাকে গলা টিপে হত্যা করেন সিকদার। পরে তাঁকে মশারির নিচে রেখে ঘরের দরজায় তালাবদ্ধ করে চলে যান তিনি। এরপর দুদিন লায়লা বেগমের ছেলেরা মায়ের খোঁজ না পেয়ে স্বজনদের ওই বাড়িতে পাঠান। আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী ঘরের দরজা ভেঙে লায়লাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন।
আমান উল্লাহ্ আরো জানান, লায়লার মৃত্যুর পর তাঁর সন্তানরা সিকদারকে সন্দেহ করেন। সিকদারের মুঠোফোন নম্বর ও নাম- ঠিকানা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব-১১) কাছে দেওয়া হয়।
ওই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর সিকদারকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি হত্যার ঘটনা স্বীকার করেন। ৩০ সেপ্টেম্বর সিকদারের জবানবন্দি ও যাবতীয় তথ্যের একটি সিডিসহ মতলব উত্তর থানায় তাঁকে সোপর্দ করে র্যাব।
ওই দিন নিহতের ছেলে ইউনুছ আজাদ বাদী হয়ে সিকদারের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১ অক্টোবর তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার পর তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ম্যাজিস্ট্রেট।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন মতলব উত্তর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান সরকার। তিনি তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৮ জুন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী মো. আমান উল্লাহ্ জানান, মামলাটি চলমান অবস্থায় ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৮ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। শেষে সিকদারের অপরাধের প্রমাণ পান আদালত। আজ তাঁর উপস্থিতিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন শরীফ মাহমুদ সায়েম।