তিন আ. লীগ নেতাকে হাসপাতালে পাঠালেন ছাত্রলীগ নেতা!
বরগুনার তালতলী উপজেলায় ছাত্রলীগের এক নেতা ও তাঁর লোকজন আওয়ামী লীগের তিন নেতাকে মারধর করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ রোববার দুপুর ২টার দিকে তালতলী বাজারের একটি দোকানে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগ নেতার নাম নয়ন বেপারী। তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
আহত তিনজন হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সোহরাব জমাদ্দার, তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কালাম ও একই ওয়ার্ডের জাহাঙ্গীর হোসেন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সোহরাব ছাড়া দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে সোহরাবকে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আহতরা জানান, তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের খোট্টারচর এলাকায় প্রস্তাবিত তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ৩০০ একর জমি ক্রয়ে তারা তিনজন মধ্যস্থতা করছিলেন। এই জমি মধ্যস্থতার জন্য উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নয়ন বেপারী তাঁদের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। কিন্তু এ চাঁদার টাকা দিতে তাঁরা বিভিন্ন সময় অপারগতা প্রকাশ করেন। তাঁরা জানান, এরই জের ধরে তালতলী বাজারের একটি দোকানে প্রস্তাবিত তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জমিজমা সংক্রান্ত আলোচনা চলার সময় দুপুরে কয়েকশ মানুষের সামনে নয়ন বেপারীর নেতৃত্বে সাত-আটজনের একটি দল তাঁদের ওপর হামলা চালায় এবং মারধর করে।
এ বিষয়ে আহত তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সোহরাব জমাদ্দার বলেন, ‘সন্ত্রাসী নয়ন বেপারী ছাত্রলীগের ব্যানারে চাঁদাবাজি, রাখাইন সম্প্রদায়ের মূর্তিচুরিসহ নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের কাছে নয়ন পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছে। চাঁদা না পেয়ে আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করে। এর আগেও নয়ন নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেনকে মারধর করেছেন।’ এ ঘটনায় তাঁরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহা. তৌফিকুজ্জামান তনু বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতার হাতে আওয়ামী লীগ নেতা লাঞ্ছিত হবেন, তা কিছুতেই মেনে নেওয়ার নয়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়।’ এ ঘটনায় আহতরা আইনের আশ্রয় নেবেন বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নয়ন ব্যাপারীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, এ বিষয়ে তিনি পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের আদনান অনিক বলেন, ঘটনাটি তিনি অবগত আছেন, এ ঘটনায় তদন্তে যদি নয়ন ব্যাপারীর অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেশ চন্দ্র হালদার বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত নন। তবে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবন্থা নেওয়া হবে।