বন্যার পানিতে ভাসল তিন শিশুসহ পাঁচজনের লাশ
লালমনিরহাটে বন্যার পানিতে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ভেলা নিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। গতকাল রোববার ভেলা উল্টে গেলে সেখানে থাকা পাঁচজনই নিখোঁজ হয়। পাঁচজনের মধ্যে গতকাল রাতে উদ্ধার করা হয় শিশু নাজিমের (৫) লাশ।
আজ সোমবার একে একে উদ্ধার হয় অন্য চারটি লাশ। এরমধ্যে একজন ছিলেন শিশু নাজিমের মা নাজমা বেগম (২৫)। এদের লাশ বন্যার পানিতে ভাসছিল।
উদ্ধার হওয়া অন্য তিনজন হলেন, মোজাম্মেল হক (৪০) ও তাঁর ছেলে আলিম (১০)। অন্যজন আবদুল মোতালেব (১৫)।
সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের পূর্ববড়ুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী জানান, নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য ওই পাঁচজন ভেলায় চড়েছিল। ডুবে যাওয়ার পর এদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, গতকাল রাতেই শিশু নাজিমের দাফন সম্পন্ন হয়। কিন্তু পুরো গ্রামের কোথাও মাটির চিহ্ন নেই। পরে সাত কিলোমিটার দূরে নিয়ে পৌর এলাকায় একটি কবরস্থানে নাজিমের দাফন সম্পন্ন হয়।
৩৫ ইউনিয়ন বন্যাকবলিত
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ জানান, সরকারি হিসেবে জেলার দুটি পৌরসভাসহ পাঁচ উপজেজেলার ৪৫টির মধ্যে ৩৫ইউনিয়নেই বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখ পরিবার পানিবন্দি। মানুষ হিসেবে যার সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় প্রায় চার লাখ।
এদিকে তিনদিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় থাকা অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বিভিন্ন চরাচঞ্চল থেকে নিজেদের উদ্যোগে শেষ সম্বলটুকু নিয়ে বিভিন্নভাবে উঁচুতে ছুটে এসে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ রাস্তাঘাটে আশ্রয় নিয়েছে।
আজ সোমবারও জেলার অন্তত ২০০ প্রাথমিক স্কুলে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
অনেকে নৌকা না পেয়ে বা নিজেদের বসতবাড়ি আঁকড়ে থাকায় পানিবন্দি অবস্থায় পড়ে আছে। এসব মানুষের জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের স্বজনরা খাবার পৌঁছে দিচ্ছে।
বন্যার পানিতে রেল লাইন মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দুদিন ধরে বন্ধ আছে লালমনিরহাট-বুড়িমারী এবং লালমনিরহাট-কাউনিয়া রেল যোগাযোগ। তবে স্বাভাবিক রয়েছে সড়ক যোগাযোগ।