রূপার লাশ তুলে পরিবারের কাছে দেওয়ার আদেশ
টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ ও হত্যার শিকার রূপা খাতুনের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রূপার বড় ভাই হাফিজুর রহমান প্রামাণিক গতকাল বুধবার লাশ উত্তোলনের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মধুপুর থানায় আবেদন করেন। পুলিশ আজ বৃহস্পতিবার আবেদনটি টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে উপস্থাপন করে।
শুনানি শেষে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম গোলাম কিবরিয়া এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা হাকিমকে আদেশ দেন। পরে জেলা হাকিম লাশ উত্তোলন করে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তরের জন্য একজন নির্বাহী হাকিমকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
দুপুরে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করা হয় বলে জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী হাকিম ও টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুর রহিম সুজন।
মামলার বরাতে জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট শুক্রবার রাতে কলেজছাত্রী রূপা বগুড়া থেকে ছোঁয়া পরিবহনের একটি বাসে করে ময়মনসিংহ যাচ্ছিলেন। ওই সময় ওই তরুণী ছাড়াও বাসে পাঁচ-ছয়জন যাত্রী ছিল। অন্য যাত্রীরা সিরাজগঞ্জ মোড়, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্ত ও এলেঙ্গায় নেমে যান। এরপর বাসটি টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার কাছাকাছি এলে বাসচালকের সহকারী শামীম রূপাকে জোর করে বাসের পেছনের আসনে নিয়ে যান।
এ সময় রূপা তাঁর কাছে থাকা পাঁচ হাজার টাকা ও মুঠোফোন শামীমকে দিয়ে তাঁকে নির্যাতন না করতে হাতজোড় করে অনুরোধ করেন। কিন্তু শামীম কোনো কথাই শোনেনি। পরে শামীম, আকরাম ও জাহাঙ্গীর তাঁকে ধর্ষণ করে। রূপা কান্নাকাটি ও চিৎকার করা শুরু করলে তারা তিনজন মুখ চেপে ধরে। একপর্যায়ে ঘাড় মটকে রূপাকে হত্যা করে। পরে মধুপুর উপজেলা সদর অতিক্রম করে বন এলাকায় রাস্তার পাশে লাশ ফেলে রেখে চলে যায়।
এদিকে, রাতে মধুপুর বনের ভেতর সড়ক থেকে এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরের দিন ২৬ আগস্ট শনিবার নিহত তরুণীর পরিচয় না পেয়ে অজ্ঞাত হিসেবে তাঁর লাশ দাফন করা হয় টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থানে। ২৮ আগস্ট সোমবার রাতে মধুপুর থানায় গিয়ে অজ্ঞাতনামা ওই তরুণীর ছবি ও পরনের সালোয়ার-কামিজ দেখে তরুণীর বড় ভাই হাফিজুর রহমান তাঁকে শনাক্ত করেন। পরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ছোঁয়া পরিবহনের বাসচালক হাবিবসহ (৩৫) পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রূপা সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার আছানবাড়ী গ্রামের জিলহাস প্রামাণিকের মেয়ে।