সহিংসতার পেছনে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র : বাণিজ্যমন্ত্রী
দেশের চলমান সহিংসতা কোনো আন্দোলন নয়, বরং এর পেছনে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘যার কারণে পাকিস্তান দূতাবাসের একজন কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি হাতেনাতে ধরা পড়েছেন।’
আজ রোববার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৪ দলের সভা শেষে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘এখানে জামায়াত-বিএনপির নেতাদের সাথে যোগাযোগ করে নাশকতা সৃষ্টি করার জন্য তারা (পাকিস্তান) টাকা-পয়সা খরচ করেছে। আজকের পত্রপত্রিকা পড়েন। পাকিস্তানের বিমান পিআইএ এর ক্রুদের কাছে, পাকিস্তানি যাত্রীর কাছে ভারতীয় ও বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়া গেছে। তার মানে পাকিস্তান পুরাপুরিভাবে বেগম খালেদা জিয়ার এই আন্দোলনকে সহায়তা দিচ্ছে। কী কারণে? একাত্তরের পরাজয়ের বদলা নেওয়ার জন্য। যেহেতু বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে।’
চলমান আন্দোলনকে জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড বলে মন্তব্য করে বাণিজ্যমন্ত্রী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কখনো সংলাপ হয় না।
জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সে সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তোফায়েল আহমেদ বলেন, তারা সন্ত্রাস-সহিংসতা সম্পর্কে উদ্বেগ দেখিয়েছেন।
গত ৫ জানুয়ারি বিএনপিকে সমাবেশ করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল কি না তা জানতে চান এক সাংবাদিক। এ প্রশ্নের জবাবে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, অবশ্যই সঠিক ছিল। কেননা তা না হলে চট্টগ্রামের মতো ঢাকাতেও নাশকতা করত এবং দেশকে অকার্যকর করার ষড়যন্ত্র করত। তোফায়েল আহমেদ অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন খালেদা জিয়া।
ধীরে ধীরে দেশ স্বাভাবিক হয়ে আসছে দাবি করে আওয়ামী লীগের এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, চলমান হরতাল ও অবরোধের পরও রপ্তানিতে কোনো ক্ষতি হয়নি, বন্ধ হয়নি কোনো শিল্প কারখানার উৎপাদন।
ব্রিফিংয়ে ১৪ দলের মুখপাত্র, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ২০ দলীয় জোটের হরতাল অবরোধ এখন তামাশায় পরিণত হয়েছে। তবে তাদের কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়িত হবে না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জনগণ এখন বিএনপির কর্মসূচি প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই স্বাভাবিক হয়ে গেছে জনজীবন।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, দানবের সাথে মানবের কোন সংলাপ-সমঝোতা হয় না। দানবের স্থান আলোচনার টেবিলে নয়, বিচারের কাঠগড়ায় ও কারাগারে। দানব দমন করার পরই সংলাপ হতে পারে। দেশজুড়ে চলমান জঙ্গিবাদী নাশকতা এবং আগুন সন্ত্রাস সরকার যেকোনো মূল্যে বন্ধ করবে।
এ সময় সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরিফ নুরুল আম্বিয়া, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশাহ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় চলমান সহিংসতার প্রতিবাদে বেশ কিছু কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয় ১৪ দল। এগুলো হলো - আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি রাজধানীসহ সারা দেশের বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে গণমিছিল, ১৬ ঢাকার আজমপুর ও ২৩ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর কাটাখালিতে সমাবেশ এবং ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময়।