‘বাচ্চাদের রোদ লেগেছে, সাংবাদিকদের কী’
প্রধানমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধন উপলক্ষে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় স্কুলের শিক্ষার্থীদের দিয়ে শোভাযাত্রা বের করা হয়।
আজ মঙ্গলবার সকালে প্রচণ্ড রোদ ও গরমের মধ্যে উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের উদ্যোগে এ শোভাযাত্রা বের হয়। প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় এ শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে অনেক শিশুই ‘কাহিল’ হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে হাতীবান্ধা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আঙ্গুরি বেগম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রোদ লাগলে বাচ্চাদের লেগেছে, আপনার (সাংবাদিকদের) তাতে কী।’ বিষয়টি অন্যায় কি না এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, প্রচণ্ড রোদ ও গরমের মধ্যে হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে দুপুর ১২টার দিকে বের হয় শোভাযাত্রাটি। এতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীও অংশ নেয়। শোভাযাত্রাটি উপজেলা শহরের প্রায় দুই কিলোমিটার ঘুরে ওই চত্বরেই এসে শেষ হয়।
শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া হাতীবান্ধা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারভেজসহ কয়েকজন জানায়, রোদের মধ্যে তাদের ডেকে আনা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু মৎস্যচাষি কেউ ছিলেন না সেখানে।
মোফাজ্জল হোসেন নামের একজন অভিভাবক বলেন, ‘আমরা সন্তানদের স্কুলে পাঠাই লেখাপড়ার জন্য, কোনো অফিসের র্যালি করার জন্য নয়।’
হাতীবান্ধা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম জি মোস্তাফা শিক্ষার্থীদের শোভাযাত্রায় পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘মৎস্য সপ্তাহের কথা বলে আমাকে চিঠি দিয়েছিল উপজেলা মৎস্য বিভাগ। তাই কয়েকজন শিক্ষার্থীকে সেখানে পাঠানো হয়েছিল।’
এ প্রসঙ্গে হাতীবান্ধা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তৈয়ব আলী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে কোনো অবস্থাতেই শিক্ষার্থীদের দিয়ে কোনো রকম কর্মসূচি পালন করা যাবে না। তাই রোদে শিক্ষার্থীদের দিয়ে শোভাযাত্রা করানোটা পুরোপুরি অন্যায়।’
শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা না ঘটে সে জন্য মৎস্য কর্মকর্তাকে সতর্ক করা হবে।’