কলেজছাত্রীকে কোপানো সেই বখাটে ইমন আটক
নেত্রকোনায় প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় কলেজছাত্রীকে জান্নাতুল আক্তারকে (১৭) কুপিয়ে আহত করায় ঘটনায় সেই বখাটে ইমনকে আটক করেছে পুলিশ।
ঘটনার ৮ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (কেন্দুয়া সার্কেল) সোহান সরকারের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ইমনকে জেলার মোহনগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে আটক করা হয়। ইমন (২০) কেন্দুয়া উপজেলার গগডা গ্রামের মহর উদ্দিনের ছেলে।
নেত্রকোনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ছানোয়ার হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
ছানোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার পরই ইমন কেন্দুয়া থেকে মোহনগঞ্জ পালিয়ে যায়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে মোহনগঞ্জ রেলস্টেশনে অবস্থান করছিলেন তিনি। প্রযুক্তির মাধ্যমে ইমনের অবস্থান জানতে পেরে সেখান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। মোহনগঞ্জ থেকে ইমনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেত্রকোনা সদরে আনা হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে কেন্দুয়া থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে নেত্রকোনার কেন্দুয়া পৌর শহরের শান্তিনগর এলাকায় কলেজছাত্রী জান্নাতুল আক্তারকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে বখাটে ইমন।
জান্নাতুল পৌর শহরের কেন্দুয়া পারভীন সিরাজ মহিলা কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সে বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার পাথাইরকান্দি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফের মেয়ে জান্নাতুল কেন্দুয়ার পারভীন সিরাজ মহিলা কলেজে ভর্তি হয়। উপজেলার পৌর এলাকায় শান্তিনগর মহল্লার একটি ভাড়া বাসায় থেকে কলেজে পড়াশোনা করত সে। একই এলাকার ইমন (২২) নামের এক যুবক তাঁকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। ইমন কেন্দুয়া উপজেলার মোজাফফরপুর ইউনিয়নের গগডা (ভুঁইয়াপাড়া) গ্রামের বাসিন্দা।
দুদিন ধরে ইমন শান্তিনগর এলাকায় তাঁর বোনের স্বামী সোহাগের বাসায় অবস্থান করছিল। সেখানে থেকে ইমন জান্নাতুলকে কুপ্রস্তাব দিচ্ছিল। মঙ্গলবার বিকেলে কৌশলে জান্নাতুলকে বাসা থেকে ডেকে নেয় এবং প্রেমের প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বখাটে ইমন জান্নাতুলকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে।
স্থানীয় বাসিন্দারা আহত ওই ছাত্রীকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। জান্নাতুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
এ ঘটনার খবর পেয়ে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (কেন্দুয়া সার্কেল) সোহান সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুলিশ ইমনের ব্যবহৃত চাপাতি, ওই ছাত্রীর মাথার কাটা চুল,তাঁর ছেঁড়া জামা, রক্তাক্ত জুতা উদ্ধার করে। তবে বখাটে ইমনকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
এ ব্যাপারে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (কেন্দুয়া সার্কেল) সোহান সরকার জানান, সম্ভবত প্রেমঘটিত বিষয় নিয়েই এ ঘটনাটি ঘটেছে।