মাদারীপুর হাসপাতালে নিম্নমানের খাবার সরবরাহের অভিযোগ
মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এ জন্য মোটা অঙ্কের কমিশন পাচ্ছেন আবাসিক চিকিৎসক ডা. শফিকুল ইসলাম রাজীব।
জানা গেছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মাদারীপুর হাসপাতালে রোগীদের খাবার পরিবেশনের জন্য বাদশা মোল্লা নামের এক ঠিকাদারকে হাসপাতালে রোগীদের খাবার পরিবেশন করতে দায়িত্ব দেওয়া হয়। নিম্নমানের, সস্তা ও কম খাবার সরবরাহ করে মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী রোগী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঠিকাদার শিডিউলে নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে অস্বাভাবিক কম ও নিম্নমানের খাবার প্রতিদিন সরবরাহ করা হয়েছে। সকালের পাউরুটিতে পোকা থাকায় রোগীরা না খেয়ে আবর্জনার সঙ্গে ফেলে দেন। দৈনিক সকালে জনপ্রতি পাউরুটি ২০০ গ্রামের স্থলে পচা ও পোকাযুক্ত ১০০ গ্রাম দেওয়া হয়। একটি কলা দেওয়া হয়, তাও নিম্নমানের। দুপুরে ও রাতে ৪০০ গ্রাম ভাতের স্থলে নিম্নমানের ২০০ গ্রাম, মসুরির ডাল ৩০ গ্রামের স্থলে ২০ গ্রাম, সপ্তাহের দু-তিন দিন মাংস সরবরাহের নিয়ম থাকলেও মাসের পর মাস তা সরবরাহ করা হয় না। দৈনিক সরবরাহ করা সিডিউলে বরাদ্দ খাবারের গুণগত মান তদারকি করতে হাসপাতালে কমিটি রয়েছে। কিন্তু এ কমিটি সেই কাজ করছে না। তাদের বিরুদ্ধেও প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের কমিশন নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিটির একাধিক সদস্য জানান, ঠিকাদার শিডিউল-বহির্ভূত সস্তা দামের ও নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করছে। একে সহযোগিতা করছে হাসপাতালেই একটি সিন্ডিকেট।
গত মঙ্গলবার এ ব্যাপারে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে রোগীরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন। এর কিছুক্ষণ পরেই এমএলএসএস রোগীদের হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা জানান, হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রাজীবের হুকুমেই রোগীদের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে আবাসিক চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম রাজীবের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
অন্যদিকে, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন ডা. দিলীপ কুমার মণ্ডল জানান, হাসপাতালে ওয়ার্ডে পরিদর্শনে গেলে রোগীরা অভিযোগ করে না। কেউ অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই অনিয়মের সঙ্গে যদি হাসপাতালের কেউ জড়িত থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।