শিক্ষক নির্যাতন : আদালতের নির্দেশে মামলা নিল থানা
বরগুনার অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুন্দর আলীকে নির্যাতনের ঘটনায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলা নিয়েছে তালতলী থানার পুলিশ। গতকাল সন্ধ্যায় এ মামলা দায়ের হয়। এর পরই এ মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই সঙ্গে উচ্চ আদালত উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টুসহ অভিযুক্ত সবাইকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়ে চার সপ্তাহের রুল জারি করেছেন।
পাশাপাশি এ ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবুল আক্তার ও উপপরিদর্শক (এসআই) হানিফের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তারও ব্যাখ্যা চেয়েছেন আদালত।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুল আক্তার জানান, উচ্চ আদালতের আদেশ পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মামলা নেওয়া হয়েছে এবং আলী আহমদ নামের একজন আসামিকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইসতিয়াক আহমেদের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩ আগস্ট রোববার সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হক এবং বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
নির্যাতিত শিক্ষক সুন্দর আলীর পরিবারকে নিরাপত্তা বিধানের পাশাপাশি অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করায় কেন উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে মনিরুজ্জামান মিন্টুকে বরখাস্ত করা হবে না তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্যও স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষক সুন্দর আলী জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টুসহ তিনজনকে আসামি করে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তালতলী থানা তাঁর মামলা নিয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ২৩ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকেলে জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে তালতলী বাজারের শত শত লোকের সামনে পেটাতে পেটাতে টেনেহিঁচড়ে নিজ কার্যালয়ে আটকে শিক্ষক সুন্দর আলীকে নির্যাতন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু। দীর্ঘ চার ঘণ্টা নির্মম নির্যাতন শেষে তাঁর রক্তমাখা জামাকাপড় বদলে নতুন জামাকাপড় পরিয়ে তারপর তাঁর কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে জোর করে স্বাক্ষর নেন মিন্টু ও তাঁর লোকজন। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তারা নির্যাতনকারী চেয়ারম্যান মিন্টুকে নিবারণ করতে পারেনি।
গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সুন্দর আলীর স্বজনরা তাঁকে প্রথমে বরগুনা সদর হাসপাতালে ও পরে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।