হাতীবান্ধায় ট্রাকের ধাক্কায় আহত হাতির মৃত্যু
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় গতকাল রোববার রাতে একটি হাতি মারা গেছে। সম্প্রতি কালীগঞ্জ করিম উদ্দিন পাবলিক স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত সার্কাসের জন্য হাতিটি লালমনিরহাটে আনা হয়েছিল।
মালিকপক্ষ না আসায় আজ সোমবার বিকেল পর্যন্ত হাতিটির মরদেহ লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের পাশে মিলনবাজার এলাকায় পড়ে ছিল। তবে এর মালিক আসার পর সেটি মাটিতে পূঁতে রাখা হবে বলে জানা গেছে।
হাতিটির মাহুত মনির হোসেন জানান, কালীগঞ্জে গত ৩১ ডিসেম্বর সার্কাস প্রর্দশনী শেষ হওয়ার পর হাতিটি সেখানেই রেখে সার্কাস দল চলে যায় নারায়ণগঞ্জে। ফলে তখন থেকে হাতিটি কালীগঞ্জ-হাতীবান্ধা উপজেলার মধ্যে ঘোরাফেরা করছিল। এরই ধারবাহিকতায় কয়েকদিন আগে সেটি হাতীবান্ধার মিলন বাজার এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন দোকানপাট ও সড়কে গাড়ি থামিয়ে টাকা তুলে আসছিল। এই অবস্থায় গত শুক্রবার মহাসড়কে একটি ট্রাক থামাতে গেলে আকস্মিকভাবে ট্রাকটি হাতিটিকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে তার সামনের একটি পায়ের নিচের আঘাত লাগে। সেদিন থেকে হাতিটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর আগে থেকে অবশ্য হাতিটির পেছনের একটি পা ভাঙা ছিল। গত রোববার বিকেলে হাতীবান্ধার মিলন বাজার মৌলবী আবুল কাশেম সিনিয়র মাদ্রাসার মাঠে হাতিটিকে বেঁধে রাখা হলে ওইদিন রাতে সেটি মারা যায়।
হাতিটির বর্তমান মালিক বগুড়ার মগাস্থানগড়ের তোফাজ্জল হোসেন সরকার হাতীবান্ধার উদ্দেশে রওয়া হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেখানে পৌঁছে মৃত হাতিটিকে মাটিচাপা দেওয়া হবে। আর একবছর পর এর হাড়গোড় তোলা হবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাতি মারা যাওয়ার খবর শুনে রাত থেকেই সেটি দেখতে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা বয়সী লোকজন এসে সেখানে ভিড় করছেন। সাধারণ মানুষের ভিড় সারাদিনই লক্ষ্য করা গেছে।
হাতীবান্ধা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রসূন কান্তি দাস বলেন, হাতিটিকে ট্রাক ধাক্কা দেওয়ার পর পরই ট্রাকটি পালিয়ে গেছে।
হাতীবান্ধা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বাবুল মৃত হাতিটি দেখে এসেছেন জানিয়ে বলেন, ‘ট্রাকটি ধাক্কা দেওয়ায় সেটি পড়ে গিয়ে আঘাত পেয়েছিল। আর আগে থেকেই সেটি অসুস্থ ছিল। ফলে সেটি মারা গেছে।’ হাতিটি কালীগঞ্জ থেকে হাতীবান্ধা গিয়েছিল বলে সেখানকার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার প্রত্যয়ন নিয়ে মৃত হাতিটি পূঁতে ফেলতে হবে বলে জানান তিনি।