১৩ দিন পরও উদ্ধার হয়নি নরসিংদীতে অপহৃত স্কুলছাত্রী
নরসিংদীর শিবপুরে দুর্বৃত্তদের হাতে অপহৃত ষষ্ঠ শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ১৩ দিন পরও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় স্থানীয় যুবক মাসুমকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হলেও এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
তবে অপহরণকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শিবপুর থানা পুলিশ ও অপহৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিবপুরের উত্তর কারারচর এলাকার মাসুম বেশ কয়েকদিন ধরে নরসিংদী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সুস্মিতা সিংহকে (১২) উত্ত্যক্ত করে আসছিল। বিষয়টি সুস্মিতা তার পরিবারকেও জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুস্মিতার অভিভাবকরা মাসুমকে বকাঝকা করে। এতে ক্ষিপ্ত হয় সে।
গত ৩ আগস্ট বিকেলে সুস্মিতা কোচিংয়ে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। এ সময় কিছু দূরে ওত পেতে থাকা মাসুমসহ তিনজন তার মুখ চেপে ধরে জোর করে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে চলে যায়।
ওই সময় সুস্মিতার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে গাড়িসহ পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় গত ৬ আগস্ট রাতে স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে উত্তর কারাচর এলাকার মাসুম, তাঁর বাবা বাবুল মিয়া ও মা নাজমা বেগমকে আসামি করে শিবপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনার ১৩ দিন পরও অপহৃতকে উদ্ধার করতে না পারায় জেলার পুলিশ সুপারের শরণাপন্ন হন তার বাবা সুকান্ত সিংহ। তবে এতে সুকান্ত সিংহের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করেছেন শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাম হোসেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাম হোসেন বলেন, ‘অপহৃত স্কুলছাত্রীর বাবা বিষয়টিকে অতিরঞ্জিত করছেন। তিনি একবার পুলিশ সুপারের কাছে আর একবার সাংবাদিকদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন।’
তবে এখনো কেন সুস্মিতাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি, এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারেননি ওসি।
অপহৃত স্কুলছাত্রীর বাবা সুকান্ত সিংহ বলেন, ‘আমার একমাত্র মেয়েটাকে অপহরণ করেছে বখাটেরা। পুলিশ, এলাকাবাসী, গ্রামের সবার কাছে ধরনা দিয়েছি মেয়েটাকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। কেউ আমার কষ্ট বুঝেনি। তাই নিরুপায় হয়ে আমি পুলিশ সুপারের কাছে গেছি।’
এদিকে অপহরণের ১৩ দিন পরও স্কুলছাত্রী উদ্ধার না হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নরসিংদী জেলা শাখা। দ্রুত স্কুলছাত্রীটিকে জীবিত উদ্ধার না করা হলে মানববন্ধনসহ কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার (এসপি) আমেনা বেগম জানান, ঘটনার পর থেকেই আসামিরা পালিয়ে গেছে। পুলিশ তাদের ধরতে সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে যে, দ্রুত সময়ের মধ্যে স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারের পাশাপাশি আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।