৩০ ঘণ্টা পর মায়ের কোলে নবজাতক
রোববার রাত ১০টা। ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার বিশ্বনাথপুর এলাকার জাহাঙ্গীর ও রানু আক্তার দম্পতির সংসারে আসে ফুটফুটে এক ছেলেশিশু। পরিবারে শান্তির পরশ। কিন্তু সেটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। কারণ, জন্মের কয়েক ঘণ্টা পরই সোমবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে শিশুটিকে নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হয় মা-বাবাকে। সেখানে তিন দিন চিকিৎসা নিয়ে শিশুটি সুস্থ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এর পর আবারো দুঃখ জাহাঙ্গীর দম্পতির পরিবারে।
গত বুধবার বিকেল ৫টার দিকে দুধ পান করাতে গিয়ে রানু বেগম জানতে পারেন, তাঁর বাচ্চাকে নিয়ে গেছে বিল্লাল হোসেন নামের অপর দম্পতি। অনেক খোঁজাখুঁজি করে বাচ্চা না পেয়ে রাত ৯টায় পরিবারটি দেখা করেন নবজাতক বিভাগের অধ্যাপক ডাক্তার আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। বাচ্চার খোঁজ না পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে তাঁরা দেখা করেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফসিউর রহমানের সঙ্গে। ওই সময় পরিচালক তাঁদের ধৈর্য ধরতে বলেন।
গতকাল বিকেল ৩টার দিকে হাসপাতালের পরিচালক ফসিউর রহমান ও নবজাতক বিভাগের ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন এনটিভি অনলাইনকে জানান, শিশুটি হারায়নি, বদল হয়েছে। উদ্ধারের ব্যবস্থা হচ্ছে, চিন্তার কারণ নেই। কিন্তু এর পরও রাত ৮টা পর্যন্ত হারানো শিশুর সন্ধান মেলেনি। হাসপাতালে স্বজনরা উদ্বিগ্ন হচ্ছে। এর পর রাত ৯টায় হাসপাতালের উপপরিচালক তাজুল ইসলাম ফোন করে এনটিভি অনলাইনকে জানান, বাচ্চা পাওয়া গেছে।
খবর পেয়ে এ প্রতিবেদক ছুটে যান হাসপাতালে। কথা হয় নবজাতক বিভাগের ইনচার্জ আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি উত্তরে জানান, পাশাপাশি ছিল দুটি বাচ্চা। মাওনা চৌরাস্তা এলাকার বিল্লাল হোসেন ও রানু বেগমের বাচ্চার ছুটি দেওয়া হয় গত বুধবার বিকেল ৩টায়। ভুলক্রমে জাহাঙ্গীর-রানু আক্তার দম্পতির বাচ্চা দেওয়া হয় বিল্লাল পরিবারকে। সেখানেই সৃষ্টি হয় জটিলতা।
শিশু উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য নেওয়া হয়েছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না।’
আনোয়ার হোসেন জানান, হাসপাতালের ওয়ার্ডমাস্টার হাসান ও ওয়ার্ডবয় শফিক একটি মাইক্রোবাস নিয়ে মাওনা থেকে শিশু উদ্ধার করে নিয়ে এসেছে।
কার জন্য এমন হলো? এ প্রশ্নের জবাবে আনোয়ার জানান, হাসপাতাল সম্পর্কে খারাপ ধারণা যাতে না হয়, সে জন্য তাঁরা অভ্যন্তরীণ তদন্ত করবেন। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।