সমভাবে উন্নয়ন চায় সরকার : মুখ্য সচিব
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, সরকার চায় সারা দেশে সমভাবে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হোক। বিবিধ কারণে ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, শেরপুর, জামালপুর ও টাঙ্গাইল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের দিক থেকে পিছিয়ে আছে। সে জন্য আজকে বিশেষভাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি সরকারের সামগ্রিক কর্মকাণ্ডের একটি অংশ।
আজ শনিবার দুপুরে ময়মনসিংহে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিইআরডি) মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ আয়োজিত এক সভার ফাঁকে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন মুখ্য সচিব। এ সভায় বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছয় জেলার উন্নয়ন কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হয়। স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন এ সভায়।
মুখ্য সচিব তাঁর সফরের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘আমরা এভাবে বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন এলাকায় যাব, যাতে করে স্থানীয় সমস্যাগুলো যথাযথ ও কার্যকরভাবে আমাদের নজরে আসে। এতে করে ওই অঞ্চলের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে নীতি-নির্ধারণ করা সহজ হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নির্দেশ রয়েছে যাতে সব জেলায় সমভাবে উন্নয়ন হয়। তারই অংশ হিসেবে এখানে আসা।’
এ সময় ময়মনসিংহ বিভাগ বাস্তবায়ন সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মুখ্য সচিব বলেন, ‘বিভাগ সরকারের সিদ্ধান্তে হয়েছে। কয়টা জেলা নিয়ে হবে, কবে নাগাদ করা যাবে- এসব বিষয় নিয়ে কাজ চলছে। আশা করি, খুব শিগগির তা বাস্তবায়ন হবে।’
এর পর দুপুর সাড়ে ১২টায় মুখ্য সচিব ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে বসে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পঞ্চগড় জেলার অন্তর্গত গাড়াতি ছিটমহলে গাড়াতি ডিজিটাল সাব-স্টেশন উদ্বোধন করেন। এর আগে সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আয়োজিত মাদকবিরোধী সচেতনতামূলক র্যালিতে অংশ নেন।
মতবিনিময় সভায় বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছয় জেলার জেলা প্রশাসক, ছয়জন জেলা পরিষদ প্রশাসক, ছয় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ৬০ জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), ৬০ জন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ৪৬ জন পৌর মেয়র এবং ছয়জন সিভিল সার্জন অংশ নেন।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আব্দুর মালেক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উল আলম, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হুমায়ুন খালিদ, পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান অরূপ কুমার চৌধুরী, সরকারি কর্মকমিশনের সদস্য উজ্বল বিকাশ দত্ত, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সদস্য মো. আলাউদ্দিন। এ ছাড়া সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় ৩২ জন উপজেলা চেয়ারম্যান স্থানীয় সমস্যা তুলে ধরে তাঁদের বক্তব্য রাখেন।
সভায় ধোবাউড়া উপজেলার চেয়ারম্যন ও সরকারি দলের নেতা মজনু মৃধা বলেন, সরকারি নির্দেশে ১৭টি বিভাগের ফাইল-নথি অনুমোদনের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে আসার কথা। কিন্তু তা করা হচ্ছে না।
জবাবে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আব্দুল মালেক বলেন, সরকার ১৭টি বিভাগের নথি উপজেলা পরিষদের কাছে ন্যস্ত করেছে। এটা কেউ না মানলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তারাকান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মোতাহার হোসেন তালুকদার বলেন, তাঁর উপজেলার বয়স দুই বছর হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কার্যালয় নাই, গাড়ি নাই, এমনকি স্টাফও নাই। ২৫ (ক) ধারার ভয়ে কেউ কথা বলতে সাহস করে না।
স্থানীয় সরকার সচিব তাঁর বক্তব্যে শুনে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, অবিলম্বে সব পাবেন।
হালুয়াঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ খান বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নৈশপ্রহরী নিয়োগে করা আইনে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে, মন্ত্রীকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। নিয়ম করা হয়েছে তিনজনের প্যানেল হবে। এমপি-মন্ত্রী যার নামের পাশে টিক চিহ্ন দেবেন, তিনিই যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। এ ক্ষেত্রে উপজেলা চেয়ারম্যান কিছুই না।
ফারুক খান বলেন, মানুষ হিসেবে সবার মর্যাদা সমান হলেও সবার যোগ্যতা সমান নয়। তিনি এ আইনের তীব্র বিরোধিতা করেন।