আড়িয়াল খাঁ নদে ভাঙন, হুমকিতে মহাসড়ক
আড়িয়াল খাঁ নদের পানি বেড়েছে। প্রবল স্রোতের তোড়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-খুলনা-বরিশাল মহাসড়কের রক্ষা বাঁধের শিবচরের দত্তপাড়া অংশের প্রায় দেড়শ মিটার বাঁধ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৫টি বাড়ি। ভাঙন অব্যাহত থাকায় মহাসড়কটি যেমন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, তেমনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে দক্ষিণাঞ্চলবাসীও। নদের পাড়ে যাঁদের বসবাস, তাঁদের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নদীর পাড় থেকে বাড়িঘর সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
urgentPhoto
২১ জেলার যোগাযোগের এই মহাসড়কটির মাত্র ২০০ মিটার দূরত্বে এই নদের ভাঙনে নির্লিপ্ত রয়েছে খোদ সওজ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। কারোর কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
গত দুদিনে নদীটি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আড়িয়াল খাঁ নদে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢাকা-খুলনা-বরিশাল মহাসড়কের হাজি শরীয়তউল্লাহ সেতুসংলগ্ন বাঁধের শিবচরের দত্তপাড়া অংশে গত দুদিনে দেড়শ মিটার জায়গা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙন খুব দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। নদীভাঙন মহাসড়কের মাত্র ১০০ মিটারের মধ্যে চলে আসায় সংলগ্ন এলাকায় আ তঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভাঙন প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সড়ক ও জনপথ বা পানি উন্নয়ন বোর্ড। গত বছরও একই বাঁধে ভাঙন দেখা দিলে ভাঙন ঠেকাতে অস্থায়ীভাবে বালুর বস্তা ফেলা হয়।
দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কটি রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে দক্ষিণাঞ্চলবাসী। ভাঙনের ভয়াবহতা তুলে ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
শিবচরের দত্তপাড়ার জাকির, মহসিন ও ফয়সাল জানান, আড়িয়াল খাঁ নদের পানি দিন দিন বাড়ছে। এতে নদীর পাড় ভাঙা শুরু হয়েছে। তাঁদের বাড়িঘর ভেঙে গেছে। মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২৫ মিটার জায়গা নদীতে বিলীন হয়েছে। এটি অব্যাহত থাকলে মহাসড়কটি টিকিয়ে রাখাই অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
মাদারীপুরের শিবচরের দত্তপাড়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সুরুজ মিয়া বলেন, মহাসড়ক রক্ষা বাঁধ ভাঙছে। প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। যদি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না যায়, তাহলে মহাসড়ক হুমকির মধ্যে পড়বে।
মাদারীপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাহাদাত হুসাইন চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে শিবচরে হাজি শরীয়তউল্লাহ নামক স্থানটিতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ স্থানটিকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। গত বছরেও এখানে এ রকম ভাঙন দেখা দিয়েছিল। নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবারো ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা খুব শিগগির জরুরি অস্থায়ী প্রতিরক্ষার কাজ করে একটা ব্যবস্থা নিতে পারব বলে আশা রাখি। তা ছাড়া একটা বড় ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ দেওয়া আছে।’