কিশোরী বিউটি ধর্ষণ ও হত্যা, বাবুলের জবানবন্দি গ্রহণ
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জের কিশোরী বিউটি আক্তার (১৪) ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুল মিয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। একইসঙ্গে জবানবন্দি দিয়েছেন নিহত বিউটির চাচা ময়না মিয়া।
আজ শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত হবিগঞ্জের বিচারিক হাকিম তৌহিদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়। আদালত পরিদর্শক ওহিদুজ্জামান এ তথ্য জানান।
গত ২১ জানুয়ারি শায়েস্তাগঞ্জের ব্রাহ্মণডোরা গ্রামের ১৪ বছরের কিশোরী বিউটি আক্তারকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান বাবুল মিয়া ও তাঁর সহযোগীরা। এক মাস আটকে রেখে ধর্ষণ-নির্যাতন করা হয় তাকে। এরপর বিউটিকে তার বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান বাবুল।
এ ঘটনায় ৪ মার্চ বিউটির বাবা দিনমজুর সায়েদ আলী বাদী হয়ে বাবুল ও তাঁর মা স্থানীয় ইউপি সদস্য কলমচানের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন।
ওই মামলায় সাক্ষী করা হয় সায়েদ আলীর ভাই ময়না মিয়াকে। এ ঘটনার পর বিউটিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় লাখাই উপজেলার গুণিপুর গ্রামে তার নানার বাড়িতে। গত ১৬ মার্চ রাতে ওই বাড়ি নিখোঁজ হয় বিউটি। পরদিন গত ১৭ মার্চ গুণিপুর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে হাওরে বিউটির লাশ পাওয়া যায়।
গত ১৮ মার্চ বিউটির বাবা সায়েদ আলী বাদী হয়ে বাবুল মিয়া ও তাঁর মা ইউপি সদস্য কলম চান বিবিকে আসামি করে শায়েস্তাগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে গত ২১ মার্চ পুলিশ বাবুলের মা ইউপি সদস্য কলম চান ও সন্দেহভাজন হিসেবে বাবুলের বন্ধু একই গ্রামের ইসমাইল মিয়াকে অলিপুর থেকে গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনায় গত ২৯ মার্চ হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আ স ম শামছুর রহমান ভুঁইয়াকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেন পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরা। কমিটির সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা ও সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম।
গত ৩১ মার্চ সিলেটে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব) আটক করে বাবুল মিয়াকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিউটিকে অপহরণের কথা স্বীকার করে আসামি বাবুল। তবে ধর্ষণ ও হত্যার কথা অস্বীকার করে। র্যাব ৯ এর অধিনায়ক ল্যাফটেনেন্ট কর্নেল আলী হায়দার আজাদ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘বিউটি হত্যাকান্ডের পরপরই বাবুল হবিগঞ্জ থেকে পালিয়ে সিলেটে এসে আশ্রয় নেয়।’