‘পকেটমার’ বলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককে পেটাল দুর্বৃত্তরা
ময়মনসিংহ শহরের প্রাণকেন্দ্রে কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ বুধবার সন্ধ্যায় শহরের নদী বাংলা কমপ্লেক্সের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষক সুব্রত কুমার দে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের ডিন এবং অর্থ ও হিসাব শাখার পরিচালক। তিনি ‘নদী বাংলা’ কমপ্লেক্সের একটি ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে ভাড়ায় থাকেন। তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল ত্রিশালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগীত বিভাগের ছাত্র পাপ্পু এনটিভি অনলাইনকে জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শিক্ষক সুব্রত কুমার দে ‘নদী বাংলা’র সামনে গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই ২০-২৫ দুর্বৃত্ত তাঁর ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা পকেটমার বলতে বলতে শিক্ষককে মারতে মারতে তাঁর শার্টের পেছনের কলার ধরে টেনে পাশের বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের গলিতে নিয়ে যায়। সেখানে বেদম মারধরের পর আবার তাঁকে ‘নদী বাংলা’র সামনে নিয়ে আসে।
শিক্ষকের ব্যক্তিগত চালক রানা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, পরে সেখানে অনেক লোকজন জড়ো হলে আহত শিক্ষককে ফেলে রেখে দুর্বৃত্তরা চলে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, আধা ঘণ্টা ধরে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা শিক্ষক সুব্রত কুমার দে’কে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাঁকে পাশের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে তাঁকে আবার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মামলা দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক মো. ফজলুর কাদের চৌধুরী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘অর্থ-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে বলে আমরা সন্দেহ করছি। আজকে দুপুরে একজন ঠিকাদার নাকি ওনার সঙ্গে বিলের ব্যাপারে কথা বলেছিল। আমরা সেটা চিন্তা করতেছি। ওই ঠিকাদারের লোকজন এভাবে অ্যাটাক করেছে, এটা আমাদের ধারণা। আমরা এখনো কনফার্ম হতে পারি নাই। আমরা এখন থানায় যাব, দ্রুত আইন-আদালতেও যাব। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই আমরা মামলা করব।’
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের স্ত্রী মল্লিকা দে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমার জানামতে আমার স্বামী অন্যায়কে প্রশ্রয় দেন না। তিনি নিজেও অন্যায় করেন না। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, আমি তাদের বিচার চাই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক মো. ফজলুর কাদের চৌধুরী বাদী হয়ে রাতে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। দ্রুত বিচার আইনের আওতায় হায়দার কনস্ট্রাকশন ও এর ঠিকাদার তারেকসহ অজ্ঞাত ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। থানার ওসি কামরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।