স্ত্রী ও শ্বশুরকে কুপিয়ে হত্যা, যুবক গ্রেপ্তার
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীর পাড়েরহাট এলাকায় স্ত্রী ও শ্বশুরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন আপন সারেং (৩২) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইন্দুরকানী উপজেলার পাড়েরহাট নৌ পুলিশ ফাঁড়ির কাছে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাহাঙ্গীর ফকির (৪০) এবং তাঁর দুই মেয়ে রিপা (২১) ও হীরা (১৪) পাড়েরহাট বাজার থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময় তাঁরা স্থানীয় শহীদ মিনার অতিক্রম করার পর ওত পেতে থাকা আপন তাঁদের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং তাঁদের উপর্যুপরি কোপাতে থাকেন। এতে আহত জাহাঙ্গীর ও তাঁর এক মেয়ে রিপা পাশের একটি নালার মধ্যে পড়ে যান। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহাঙ্গীর ও রিপাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা ঘাতক আপনকে আটক করে পুলিশে দেয়।
নিহত জাহাঙ্গীরের বোন শিল্পী জানান, সাত-আট বছর আগে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার আপনের সঙ্গে বিয়ে হয় পিরোজপুর সদর উপজেলার বাদুরা গ্রামের রিপার।
এই দম্পতির তিন বছর বয়সের একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। যৌতুকের জন্য প্রায়ই মাদকাসক্ত আপন তাঁর স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। তাই জাহাঙ্গীর তিন বছর আগে তাঁর মেয়েকে পাড়েরহাটের ভাড়া বাসায় নিয়ে আসেন। সেখানেও একইভাবে রিপাকে নির্যাতন করতেন আপন। এ ঘটনায় একাধিকবার স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠক হয়েছে। আজ শুক্রবারও পুনরায় সালিশ বৈঠকের কথা ছিল। অন্যদিকে, আহত হিরা পিরোজপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পিরোজপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাকিল সরোয়ার জানান, তিনজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে দুজন হাসপাতালে আনার আগেই মারা যায়। আরেকজনের চিকিৎসা চলছে।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাম কবির বলেন, ‘আমরা আপনকে গ্রেপ্তার করেছি। তাঁর কাছ থেকে রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করেছি। ছুরিটি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।’