লিবিয়ায় ট্রলারডুবিতে রাজৈরের চাচা-ভাতিজা ‘নিখোঁজ’
লিবিয়ার উপকূলে ট্রলারডুবির ঘটনায় মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার একটি পরিবারের দুই সদস্য ‘নিখোঁজ’ রয়েছে বলে জানতে পেরেছে তাঁদের পরিবার। ট্রলারডুবির ঘটনায় জীবিত উদ্ধার হওয়া একই গ্রামের কয়েকজন যুবকের কাছ থেকে তারা এমন তথ্য জানতে পেরেছে। এর পরই ওই সব পরিবারে শুরু হয় শোকের মাতম।
তবে স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে কোনো কিছু জানে না। সরকারিভাবেও এখনো কোনো কিছু জানানো হয়নি।
‘নিখোঁজদের’ পরিবার জানায়, উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের উত্তর হোসেনপুর গ্রামের হাকিম উদ্দিন খালাসীর ছেলে গনি খালাসী (৪১) ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এক বছর চার মাস আগে লিবিয়া যান। এর কিছুদিন পর তাঁর বড় ভাই ফজল খালাসীর ছেলে কামরুল খালাসীও (১৯) লিবিয়ায় যান। সেখানে তাঁরা একত্রে থাকতেন।
কয়েকদিন আগে গনি খালাসীর কাছে থাকা প্রায় আড়াই লাখ টাকা দুর্বত্তরা নিয়ে যায়। এই ঘটনার পর তিনি ইতালি যাওয়ার চিন্তা করেন। গত বৃহস্পতিবার ভাতিজা কামরুল খালাসীকে নিয়ে গণি খালাসী সমুদ্র পথে ইতালি যাওয়ার জন্য ট্রলারে ওঠেন। সেই ট্রলারে একই গ্রামের দুজন এবং পাশের গ্রামের আরেকজন ছিল।
এঁরা হলেন ছলেমান খালাসীর ছেলে নিলু খালাসী (৩২), ধনী মুন্সির ছেলে উজ্জ্বল মুন্সি (২৭) ও পাশের গ্রাম তাঁতীকান্দির তৈয়ব আলী মেম্বারের ছেলে শরীফ হোসেন (৩৫)। ট্রলারডুবির ঘটনার পর এ তিনজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে নিলু খালাসীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কামরুল খালাসীর চাচাতো বোন সালমা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার আমরা তাদের নিখোঁজের খবর পেয়েছি। ট্রলারডুবির ঘটনায় বেঁচে যাওয়া নিলু খালাসী, উজ্জ্বল মুন্সি ও শরীফ মোবাইল ফোনে এ তথ্য জানিয়েছেন। এখন আমরা লাশের অপেক্ষা করছি।’
উদ্ধার হওয়া শরীফ হোসেনের বাবা তৈয়ব আলী মেম্বার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ফোনে আমার সঙ্গে শরীফের কথা হয়েছে। ও এখন ভালো আছে। সে জানিয়েছে, গনি খালাসী ও তাঁর ভাতিজাকামরুল খালাসী ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন।
গণি খালাসীর স্ত্রী তানজিলা বেগম আহাজারি করে বলেন, ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ করে লিবিয়াতে গিয়েছিল। সেখানের অবস্থা ভালো না থাকায় ইতালি যেতে চাচ্ছিল। কিন্তু সমুদ্র আমাদের সব কেড়ে নিল। ঋণের টাকাও শোধ করতে পারেনি। এখন আমরা কোথায় যাব।
কামরুল খালাসীর বড় চাচি আলেয়া বেগম বলেন, কামরুল পড়াশো্নায় ভালো ছিল। এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ফোর পয়েন্ট পেয়েছিল। গত বছর রেজাল্ট পেয়েই সে লিবিয়াতে গিয়েছিল। ওর বাবা-মা হজে গেছে। তারা এখনো এ খবর পায়নি। তাদের জানানো হয়নি।
এ ব্যাপারে রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনার কথা শুনিনি। খবর নিচ্ছি। খবর নেওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।