চতুর্থ দিনের মতো ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি চলাচল বন্ধ
উজান থেকে নেমে আসা পানির তোড়ে ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটের পাইলিং ভেঙে যাওয়ায় চারদিন ধরে বন্ধ রয়েছে ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌপথের ফেরি চলাচল। লক্ষ্মীপুরের সঙ্গে বরিশাল, খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে যোগাযোগের এই পথটি অচল হয়ে পড়ায় মেঘনার দুই পাড়ে আটকা পড়েছে শত শত গাড়ি। চরম দুর্ভোগে মধ্যে রয়েছেন গাড়ির চালকরা।
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় উত্তাল মেঘনা নদীর ঢেউয়ের আঘাতে ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটের সংযোগ সড়ক বিলীন হয়ে যাওয়ায় গত জুলাইয়ের শেষে দিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভোলা-লক্ষ্মীপুর পথে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মেরামত করার পর আবার ফেরি চলাচল শুরু হয়েছিল। কিন্তু গত মঙ্গলবার তীব্র স্রোতের কবলে পড়ে পাইলিং ভেঙে ফেরিঘাটের পন্টুন ও গ্যাংওয়ে অন্যত্র সরে যাওয়ায় ফের ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। পুনরায় ঘাট স্থাপন না হওয়া পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে বলে ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
আজ প্রায় ১৮ দিন ধরে ফেরিঘাটে আটকে রয়েছেন ট্রাকচালক মো. সাদ্দাম আলী। তিনি বলেন, ‘এখন আর কিছু ভালো লাগছে না। আজ ১৮টা দিন ধরে একই স্থানে দাঁড়িয়ে। আমার ট্রাক চালানোর জীবনে এ ধরনের সমস্যায় আগে কখনো পড়িনি। খুব কষ্টে চলে আমাদের জীবন। দেখার কেউ নেই।’
খুলনা থেকে আসা মো. অমিত রায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘মালিক বলেছে সহজ পথে চট্টগ্রাম যেতে। তাই ভোলা-লক্ষ্মীপুর পথ বেছে নিয়েছিলাম। আজ ১৬ দিন হতে যাচ্ছে নদী পার হতে পারিনি। এখন ফিরেও যেতে পারছি না। রাতে গাড়ি পাহারা দিতে হচ্ছে। থাকা-খাওয়ার অনেক সমস্যা হচ্ছে। কবে নাগাদ ফেরি চলাচল চালু হবে তাও বলছে না না ঘাট কর্তৃপক্ষ।’
বরগুনা থেকে আসা অহিদুল্লাহ বলেন, ‘ভাই এসব খবর ছাপিয়ে কী হয়। সরকার তো কিছু করছে না। আপনারা আমাদের সঙ্গে ঠাট্টা করছেন। ফেরিঘাটে চোরের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। কেউ খোঁজ পর্যন্ত নিচ্ছে না। চার কিলোমিটার এলাকার রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে কয়েক শ ট্রাক। কী যে হবে বলতে পারছি না। এখন ঘুরে যাব, তাও পারছি না। ঘাট ঠিক করার দুই তিন দিনের মাথায় আবারও বন্ধ হয়েছে। আসলে এসব বিষয় দেখার কেউ নেই।’
ইলিশা ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক আবু আলম বলেন, ‘পুনরায় ঘাট স্থাপন না হওয়া পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে। এখন ঘাট নির্মাণ করা আমাদের কাজ নয়। এটা করবে বাংলাদেশ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। তারা ঘাট ঠিক করলেই আমরা ফেরি চালাব। তা ছাড়া ফেরিতেও রয়েছে সমস্যা। দুটি ফেরি, একটি খুবই দুর্বল। বারবার বলা সত্ত্বেও ভালো ফেরি এই পথে দিচ্ছে না।’
অপরদিকে ইলিশা পুলিশফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক (এসআই) মো. বশির আহমেদ বলেন, ‘আমার জনবল কম। তারপরও আমি পুলিশ দিয়ে পাহারা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’