‘বঙ্গবন্ধু যদি ইয়াহিয়া-ভুট্টোর সঙ্গে বসতে পারেন, এখন সমস্যা কী?’
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে দলটির সাবেক নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না প্রশ্ন তুলেছেন, ‘১৯৭১ সালে যদি বঙ্গবন্ধু ইয়াহিয়া-ভুট্টোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন, তবে এখন কেন নয়? হেফাজতে ইসলামের সাথে বসা গেলে, কেন এখন কথা বলতে অসুবিধা?’
আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ভাষাসৈনিক অলি আহাদ স্মৃতি সংসদ আয়োজিত সেমিনারে মান্না এসব প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সমগ্র জাতিকে নিয়ে একটি জাতীয় সংলাপ হতে হবে।
সরকারের উদ্দেশে মান্না আরো বলেন, ‘ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, আমেরিকান ফরেন মিনিস্টার, জাতিসংঘ -এত সহজে (এদের) উড়িয়ে দিতে পারবেন না। সমস্ত বাংলাদেশকে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছেন, একের পর এক। মগের মুল্লুক নাকি? দেশ কি কেবল আপনাদের? আমি আবার বলছি, আমি কাঠগড়ায় তুলতে চাইছি না কাউকে।’ তিনি বলেন, ‘যাই করেছেন, থুক্কু দিলাম। আপনারা বলছেন, এদিকে নাকি ডাকাত। ডাকাতের সাথে কী কথা? আপনারা বিডিআরের সাথে কথা বলতে পারলেন, চট্টগ্রামের ‘হিল ট্রাক্ট’-এর (শান্তি বাহিনীর) সঙ্গে আপনারা কথা বলতে পারলেন, হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে কথা বলতে পারলেন, আমাদের সবার নেতা, আপনাদের নেতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ইয়াহিয়া-ভুট্টোর সঙ্গে ১৫-১৬দিন ধরে আলোচনা করতে পারলেন, আর এখন কথা বলতে পারলেন না কেন? সমস্যা কী? এই যে কথা বলতে পারবেন না, এই যে অজুহাতটা তৈরি করছেন এটা সামনে নিজেরা ধরা পড়ে যাবেন বলে তাই তো?’
মান্না আরো বলেন, ‘আপনারা ৫ তারিখে নির্বাচন হাইজ্যাক করেছিলেন, যা-ই অন্যায় করেছিলেন, এগুলো ভুলে যাচ্ছি, বসুন, আলোচনা করেন। এটা তো আপনাদের জন্য একটা পথ খুলে দেওয়া হচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেতে পারে, যদি মধ্যবর্তী সঠিকভাবে নির্বাচন হয়। আর নির্বাচন ছাড়া, মানুষ শাসন করে কখন? শাসনকারীর ক্ষমতার মূল কোথায়? শাসনকারীর ক্ষমতার মূল হলো জনসাধারণের ভোট, সম্মতি, যাকে ম্যান্ডেট বলা হয়। ম্যান্ডেটবিহীন শাসনব্যবস্থা, এটাকে স্বৈরাচার বলুন, অনাচার বলুন, অথবা যা খুশি বলুন, সেটা প্রশাসন নয়, সেটা শাসনব্যবস্থা নয়।’
এমাজউদ্দীন আরো বলেন, ‘সুশাসনের জন্য বাংলাদেশ এমন দুর্ভাগ্য যে এমন একটি প্রতিষ্ঠান এখন নেই। একটি প্রতিষ্ঠানকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ বিষাক্ত রাজনীতি। সুশাসনের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানও খুঁজে পাবেন না। নেই।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে যেকোনো পর্যায়ে যান, মন্ত্রীদের বাক্যগুলো উচ্চারিত হয়, ওইদিকে একটু কান দেন, শুনলেও ঘেন্না লাগে। উচ্চারণ করা যায় না।’