মুরগি-কাপড় বেঁধে মৃত ব্যক্তিকে ঝাড়ফুঁক!
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার শাকচর ইউনিয়নের শাকচর গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ আলম (৩২)। গত সোমবার রাতে বাড়ির পাশের খালে মাছ ধরতে গিয়ে সাপ দংশন করে তাঁকে। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম হাসপাতালে নেওয়ার পথে মাসুদের মৃত্যু হয়। পরে লাশ মাসুদের বাড়িতে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে দাফনের পরামর্শ দেন। কিন্তু পরদিন মঙ্গলবার পার্শ্ববর্তী চররমনী এলাকার ওঝা রৌশন আলী মাসুদ মরেনি দাবি করে তাঁর মাথায় থালা-বাটি, পায়ে মুরগির বাচ্চা ও কোমরে সাদা কাপড় বেঁধে ঝাড়ফুঁক শুরু করে। তিন দিন ধরে চলছে এই ঝাড়ফুঁক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝাড়ফুঁকে জীবিত হবে—এমন আশ্বাসে মাসুদকে দাফন করা হচ্ছে না। চেয়ারে বসিয়ে রেখে চলছে তন্ত্রমন্ত্র পাঠ।
শাকচর গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে মাসুদকে কেবল রৌশন আলীই ঝাড়ফুঁক করছেন না, গতকাল বুধবার তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ভোলার লালমোহনের আরো দুই ওঝা।
এ বিষয়ে শাকচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. সেলিম জানান, ওঝা রৌশন আলী দাবি করছে, মাসুদ এখনো বেঁচে আছেন। সে জন্য দুদিন ধরে ঝাড়ফুঁক দেওয়া হচ্ছে। ওঝারা দর্শনার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলছেন।
মাসুদ আলম এখনো বেঁচে আছেন দাবি করে রৌশন আলী সাংবাদিকদের জানান, তিনি জীবিত আছেন। তিন ওঝা মাসুদকে চিকিৎসা দিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. গোলাম ফারুক ভূঁইয়া জানান, সাপের কামড়ে মাসুদ আলমের মৃত্যু হয়েছে বলেই তিনি জানেন। মৃত ব্যক্তিকে বাঁচানোর কথা বলে ওই পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওঝারা।