ভোলায় জলদস্যুদের গুলিতে নিহত ১, আহত ৪৫
ভোলায় বঙ্গোপসাগরে ৩০টি মাছ ধরার ট্রলারে গণডাকাতি হয়েছে। এ সময় জলদস্যুদের ছোড়া এলোপাতাড়ি গুলিতে মো. সিডু আলী নামের এক জেলে নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৪৫ জেলে আহত হয়েছেন।
urgentPhoto
আহতদের ভোলা সদর, চরফ্যাশন, দৌলতখান ও বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত সিডু আলী দৌলতখান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আলী আজগরের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে।
জেলেরা জানান, গতকাল শুক্রবার দুপুর ২টার পর চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর থেকে দক্ষিণে অন্তত ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা অবস্থায় হঠাৎ করেই দুটি জলদস্যুদের ট্রলার এসেই আক্রমণ করে। ডাকাতরা প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে অন্তত ৩০টি ট্রলারে ডাকাতি করে বলে জানান নিহত সিডুর ট্রলারের মাঝি মো. মোসলেহ উদ্দিন মাঝি। তিনি আরো বলেন, একপর্যায়ে মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে জেলেরা পালাতে গেলে জলদস্যুরা এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। গুলিতে আমার ট্রলারের মো. সিডু গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ছাড়া ওই ট্রলারসহ শাহ আলম মাঝি, মো. আলমগীর মহাজনের ট্রলারসহ অন্তত ৩০ ট্রলারের ৪৫ জেলে গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়। আহত ও নিহতদের আজ সকাল ৮টায় ভোলার দৌলতখানে নেওয়া হয়। এঁদের মধ্যে হাসেম, মিজানসহ বেশ কয়েকজনের অবস্থার চরম অবনতি হলে দ্রুত তাদের বরিশাল নিয়ে যাওয়া হয়।
আহত ব্যক্তিরা অভিযোগ করেন, তাঁরা কখনোই পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সহযোগিতা পান না।
সকাল ৬টার দিকে দৌলতখান উপজেলার ভবানীপুর মাছঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ট্রলারের যেখানে মাছ থাকার কথা ছিল, সেখানেই মাছ ধরা জালের পাশেই পড়ে ছিল জেলে সিডুর গুলিবিদ্ধ লাশ।
অপরদিকে রাস্তার ওপর চলছিল নিহত সিডুর স্বজনদের আহাজারি। তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী জেসমিন বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘কী হবে আর ছবি তুলে। আমার সন্তানের কী হবে। গর্ভের সন্তানের কী হবে। কী হবে আমার ভাগ্যে। একমাত্র তাঁর আয়ের ওপর চলত আমাদের সংসার। এখন জলদস্যুর গুলিতে সব শেষ। স্বামীর সমস্ত শরীর গুলি করে ঝাঁঝরা করে ফেলেছে।’
এদিকে এসব বিষয়ে দৌলতখান থানার ওসি মো. আবুল বাশার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। নিহত ও আহতরা দৌলতখানে এসেছে। এখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তবে ঘটনাস্থল যে থানার মধ্যে, ওই থানায় মামলা হবে। জেলেদের নিরাপত্তার বিষয় জানতে চাইলে ওসি বলেন, এ জন্য পুলিশ ও কোস্টগার্ড কাজ করে যাচ্ছেন।